ভিডিওটি মাগুরার শিশু ধর্ষণকারীকে ফাঁসিতে ঝোলানোর নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, মাগুরার শিশু আছিয়াকে ধর্ষণের ঘটনার অনেক আগে থেকেই আলোচ্য ভিডিওটি ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া যায়।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে একজন ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়ার একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, মাগুরার শিশু আছিয়াকে নির্যাতনকারীকে ফাঁসি দিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১২ মার্চ 'আসাদুল হক' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে এক ব্যক্তিকে ফাঁসি দেওয়ার একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হয়, "শিশু বাচ্চা আসিয়া কে ধর্ষণ করার কারণে ফাঁসি"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে,আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। মাগুরার শিশু আছিয়াকে নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটার অনেক আগে থেকেই আলোচ্য ভিডিওটি বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন ক্যাপশনে ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া যায়।
আলোচ্য ভিডিওটির ব্যাপারে জানতে ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম কেটে নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে 'Vadaima Film' নামে একটি ফেসবুক পেজে গতবছরের ২৫ নভেম্বর পোস্ট করা একটি রিল ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা থাকতে দেখা যায়, "🚷 প্রকাশ্যে হাজারো লোকের জনসমক্ষে লোকটিকে ঝুলিয়ে ফাঁসি দেওয়া হল, কি ছিল তার অপরাধ? চলছে একটি নতুন সিনেমা শুটিং, যা দেখতে ভিড় করেছে হাজারো উৎসুক জনতা #filmclip #filmshoot #movie #viral"। স্ক্রিনশট দেখুন--
পরবর্তীতে আরো কি-ওয়ার্ড সার্চ করে 'Rana babu' নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১০ এপ্রিল "ভালোবাসার জন্য ফাঁসি দিল 😅" শিরোনামে আপলোড করা একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটি এবং আলোচ্য ভিডিওটি হুবহু এক। তবে, ভিডিওটির ব্যাপারে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি। ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
তবে, আলোচ্য ভিডিওটি পুরোনো বলে নিশ্চিত হওয়া গেলেও ভিডিওটির ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য চলতি বছরের ৫ মার্চ মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয় আছিয়া নামে এক শিশু এবং পরবর্তীতে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার পরও শিশুটিকে বাঁচানো যায়নি।
অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। এটি মাগুরার শিশু আছিয়াকে ধর্ষণকারীকে ফাঁসি দেওয়ার ভিডিও নয়। গণমাধ্যমে পাওয়া সর্বশেষ খবরে জানা গেছে শিশু আছিয়াকে ধর্ষণ এবং হত্যা মামলার আসামি হিটু শেখ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অর্থাৎ এর বিচার কাজ চলমান রয়েছে।
সুতরাং পুরোনো একটি ভিডিও শেয়ার করে সেটিকে মাগুরার শিশু আছিয়াকে ধর্ষণকারীকে ফাঁসি দেওয়ার ভিডিও বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।