মা-ছেলের ভিডিওকে স্বামী-স্ত্রীর বলে প্রচার
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওতে দৃশ্যমান বয়স্ক ব্যক্তি দু'জন সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী নয় বরং তারা মা ও ছেলে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দু'জন বয়স্ক নারী-পুরুষের ভিডিও পোস্ট করে ইঙ্গিতে বলা হচ্ছে, তারা স্বামী-স্ত্রী। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৩ এপ্রিল 'প্রতিবাদী কণ্ঠ' নামের একটি পেজ থেকে এমন একটি ভিডিও রিলস হিসেবে পোস্ট করে ভিডিওটির উপরে লেখা হয়, "প্রিয় বৃদ্ধ হতে চাই তোমার সাথে"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওতে দৃশ্যমান নারী ও পুরুষকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওর বয়স্ক ব্যক্তি দু'জন সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী নয় বরং তারা মা ও ছেলে। ছেলে দৃষতি প্রতিবন্ধী হওয়ায় মা তার ছেলেকে খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছেন।
আলোচ্য ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে 'Tamim Media' নামের পেজ থেকে গত ১ মার্চ "অসহায় বৃদ্ধ মা ও তার প্রতিবন্ধী ছেলের একবেলার খাবার! (চোখে পানি এসে যায়)" শিরোনামে প্রকাশিত অরিজিনাল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। এতে উল্লেখ করা হয়, ভিডিওতে থাকা বৃদ্ধা নারীটি মা এবং বৃদ্ধ পুরুষটি তার ছেলে। ছেলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায়, মা তার ছেলেকে দৈনন্দিন কাজে সহযোগিতা করেন। ভিডিওটির স্ক্রিনশট দেখুন--
পাশাপাশি একই ফেসবুক পেজে আলোচ্য বয়স্ক মা-ছেলের আরো বেশকিছু ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। স্বামী-স্ত্রী হিসেবে প্রচারিত ভিডিওটির স্থিরচিত্র (বামে) ও মা-ছেলের মূল ভিডিওটির স্থিরচিত্রের (ডানে) পাশাপাশি তুলনা দেখুন--
এদিকে 'Tamim Media' পেজে ভিডিওটিতে দেয়া তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পেজটির কার্যক্রম যাচাই করে দেখে বুম বাংলাদেশ। পেজটি ঘেঁটে জানা যায়, এটি গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ি উপজেলা ভিত্তিক পরিচালিত হচ্ছে। 'তামিম মিডিয়া' ব্যানারে কিছু তরুণকে গরীব ও অসহায় মানুষদের সহায়তা করার বিভিন্ন কার্যক্রমের ছবি ও ভিডিও এই পেজে আপলোড করতে দেখা যায়। ইদুল ফিতর উপলক্ষে তাদের এমন একটি অনুষ্ঠানের ছবি ও ভিডিও নিয়ে পেজটি থেকে করা একাধিক পোস্ট পাওয়া যায়, একটি পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া, এ বিষয়ে জানতে 'তামিম মিডিয়া' পেজটিতে দেয়া মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে শেখ তামিম নামের এক ব্যক্তি ফোন রিসিভ করেন। তিনি জানান, ভিডিওটি তিনি নিজেই ধারণ করেছেন এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে দেয়া কণ্ঠটিও তার। গরীব ও অসহায় মানুষদের সহায়তা করার লক্ষ্যে কিছু তরুণ মিলে তারা তামিম মিডিয়া নামের একটি সামাজিক সংগঠন গড়ে তুলেন বলে জানান তিনি। ভিডিওতে দৃশ্যমান নারী-পুরুষ সম্পর্কে শেখ তামিম জানান, তারা মা ও ছেলে। তাদের বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার কিশোরগাড়ি ইউনিউনের কাশিয়াবাড়ি গ্রামে এবং তার বাড়িও একই গ্রামে।
অর্থাৎ ভিডিওর বয়স্ক ব্যক্তি দু'জন সম্পর্কে মা ও ছেলে।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে মা-ছেলের খাবার খাওয়ার ভিডিওকে স্বামী-স্ত্রীর ভিডিও হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।