দৃশ্যটি রংপুর কারাগারের, ছবির ব্যক্তি ঐ কারাগারেরই কারারক্ষী
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ছবির ব্যক্তি রংপুর কারাগারের কারারক্ষী মিজানুর রহমান। এছাড়াও দৃশ্যটিও রংপুরের, পাহাড়ের নয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সাথে পাঞ্জাবি পরিহিত এবং অস্ত্র হাতে থাকা একজনের একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি (সেটেলার) সেনাবাহিনীর সাথে মিলে পাহাড়ি আদিবাসীদের হামলা-গুলি করছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২০ সেপ্টেম্বর 'Jõykïrttí C' নামের অ্যাকাউন্ট থেকে ছবিটি পোস্ট করে বলা হয়, "সেনাবাহিনীর সাথে কে এটা পাহাড়ে? সেটালার + সেনাবাহিনীর মিলে পাহাড়ি আদিবাসীদের গুলি হামলা। আমাদের পাহাড়ে কি কখনো শান্তি আসবে না? হুজুরের হাতে কেন অস্ত্র থাকবে"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ছবির ব্যক্তি রংপুর কারাগারের কারারক্ষী মিজানুর রহমান। এছাড়াও দৃশ্যটি পাহাড়ে সেনাবাহিনীর অবস্থানের নয় বরং এটি রংপুর জেলা কারাগারে সেনাবাহিনীর ও কারারক্ষীদের কর্তৃক বিদ্রোহ ঠেকানোর সময়ের দৃশ্য।
আলোচ্য ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে ইউটিউবে 'দৈনিক ইত্তেফাক' এর চ্যানেলে-এ গত ১৬ আগস্ট "রংপুর জেলা কারাগারে বিদ্রোহ ঠেকাতে কঠোর নিরাপত্তা" শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এতে দেখা যায় রংপুর জেলা কারাগারে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি কারারক্ষীরা বিদ্রোহ ঠেকাতে ব্যবস্থা নিছেন। ভিডিওটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ভিডিওটির প্রিভিউ দেখুন--
পরবর্তীতে রংপুর বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বুম বাংলাদেশকে জানান, আলোচ্য ছবিতে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সাথে পঞ্জাবি পরিহিত এবং অস্ত্র হাতের থাকা ব্যক্তি রংপুর কারাগারের কারারক্ষী মিজানুর রহমান। ইমার্জেন্সি অবস্থায় তিনি সহ কারারক্ষীরা যে অবস্থান থেকে দ্রুত বের হয়ে পড়েন।
এছাড়াও মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বুম বাংলাদেশকে ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থার কারারক্ষী মিজানুর রহমান এর কিছু ছবিও পাঠিয়েছেন। একটি ছবি দেখুন--
অর্থাৎ ছবির ব্যক্তি পাহাড়ের সাধারন বাঙালি নন বরং তিনি রংপুর কারাগারের কারারক্ষী মিজানুর রহমান। এছাড়া ছবিটি পাহাড়ে সংঘর্ষ সম্পর্কিতও নয় বরং রংপুরে কারাগারে বিদ্রোহ দমনের সময়ে তোলা।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে রংপুর কারাগারের কারারক্ষী মিজানুর রহমানের অস্ত্র হাতে ছবিটি বিভ্রান্তিকর দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।