ধ্বংসস্তুপে আটকা পড়া শিশুর ছবিটি সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ছবিটি ২০২০ সালে তুরস্কের ইজমিরে ঘটা ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তুপ থেকে উদ্ধার অভিযানের সময়ে ধারণ করা।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ ও আইডি থেকে ধসে পড়া একটি ভবনের ধ্বংসস্তুপে আটকা পড়া এক শিশুর ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি গত ৬ ফেব্রুয়ারি সিরিয়া এবং তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর উদ্ধার অভিযান চালানোর সময় ধারণ করা। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি 'Hamed Reza Azhari' নামের একটি আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে লেখা হয়, "ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ভবনে আটকে পড়া একটি বাচ্চা। তুর্কি-সিরিয়া সীমান্তবর্তী শহরে ৪ হাজারের অধিক মানুষ মারা গেছে। আল্লাহ তাদের প্রতি সহায় হোক।" স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ছবিটি সাম্প্রতিক নয় বরং ২০২০ সালে তুরস্কের ইজমিরে ঘটা ভূমিকম্পের পর উদ্ধার অভিযানের সময়ে ধারণ করা।
ছবিটি রিভার্স সার্চ করলে, ছবিটি আইরিশ সংবাদমাধ্যম Independent.ie-এ "A tiny miracle: young girl pulled from rubble 90 hours after earthquake in Turkey" শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২০ সালে তুরস্কের ইজমির প্রদেশ হওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্পের প্রায় ৯০ ঘণ্টা পরে ধ্বংসস্তূপ থেকে আয়দা গেজগিন (Ayda Gezgin) নামে এক শিশুকে জীবিত অবস্থা উদ্ধার করা হয়েছিল। ছবিটি ঐ ঘটনার। স্ক্রিনশট দেখুন--
পাশাপাশি, আলোচ্য ছবিসহ খবরটি তৎকালে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম 'Dawn', মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ সহ একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে যুক্ত করতে দেখা যায়। এছাড়া ছবির স্টক ছবির ওয়েবসাইট 'Getty Images'-এও ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। এখানে ছবিটি আনাদুলু এজেন্সির বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দেখুন--
তৎকালে শিশুটির উদ্ধার অভিযানের একটি ভিডিও বার্তাসংস্থা রয়টার্সেও "'Our Miracle': Girl in Turkey rescued four days after deadly quake" শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল।
অর্থাৎ ছবিটি সাম্প্রতিক নয় বরং ২০২০ সালে তুরস্কে ঘটা অন্য একটি ভূমিকম্পের।
প্রসঙ্গত, গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় শক্তিশালী ভুমিকম্পে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ধ্বংসস্তুপ থেকে উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে।
সুতরাং ২০২০ সালে ঘটা একটি ভূমিকম্পের ছবিকে তুরস্কের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের খবরের সাথে জুড়ে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।