গাছের চূড়ায় ইব্রাহিম রাইসির পাগড়ি পড়ে থাকার ছবিটি এডিটেড
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ২০১০ সালে তোলা একসারি রেডউড গাছের একটি ছবিকে এডিট করে আলোচ্য ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একটি ছবি শেয়ার করে বলা হচ্ছে, গাছের চূড়ায় সম্প্রতি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পাগড়ি ঝুলে আছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২১ মে 'Aal Amin Islam' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে একটি ছবি পোস্ট করে বলা হয়, "আহ্ !! কি নির্মম বাস্তবতা !!! .....ইরানের সদ্য প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইবরাহীম রাইসির পাগড়ী গাছের মাথায় ঝুলে আছে!"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য ছবিটি এডিটেড। ২০১০ সালে সভেরির মার্ডসন নামে একজন ফটোগ্রাফারের তোলা রেডউড গাছের সারির একটি ছবিকে এডিট করে আলোচ্য ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।
ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ট্রিহাগার ডট কম নামের একটি ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ৫ নভেম্বর "The Major North American Conifers with Descriptions" শিরোনামে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। উইকিমিডিয়া কমন্সের উদ্ধৃতি দিয়ে ওই নিবন্ধে ছবিটির ব্যাপারে বলা হয়, সভেরির মার্ডসনের তোলা ওই ছবিতে দেখানো রেডউড গাছগুলোর বয়স ২০১০ সালে ৬০ বছর ছিল। পর্যবেক্ষণ করে ছবিটিতে দেখানো গাছগুলোর উপরে কালো রঙের কোনো বস্তু দেখা যাচ্ছে না। স্ক্রিনশট দেখুন--
উপরের নিবন্ধের সূত্র ধরে উইকিমিডিয়া কমন্সের ওয়েবসাইটে গিয়ে "File:Sequoiafarm Sequoiadendron giganteum.jpg" শিরোনামে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটির বর্ণনায় সভেরির মার্ডসনের তোলা ওই ছবিটি ২০১০ সালের ৯ মে ধারণ করা হয় বলে উল্লেখ করা আছে। উইকিমিডিয়া কমন্সের ওয়েবসাইটে প্রাপ্ত ছবিটিতেও গাছের উপরে কোনো কালো রঙের বস্তু দেখতে পাওয়া যায়নি। স্ক্রিনশট দেখুন--
এবারে আলোচ্য ছবিটি (বামে) এবং উইকিমিডিয়া কমন্সের ওয়েবসাইটে প্রাপ্ত সভেরির মার্ডসনের তোলা ছবিটি (ডানে) দেখুন পাশাপাশি--
অর্থাৎ আলোচ্য ছবিটি এডিটেড। ফটোগ্রাফার সভেরির মার্ডসনের ২০১০ সালে তোলা একটি ছবিকে এডিট করে আলোচ্য ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং এডিটেড ছবি দিয়ে ইরানের সদ্যপ্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পাগড়ির ছবি গাছে ঝুলছে বলে দাবি করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।