ছবিটি ইরানের বিক্ষোভের নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, এটি এডিথ ডেকিন্ড নামের এক শিল্পীর শিল্পকর্ম যা ২০১৪ সালে মার্তিনিক দ্বীপে প্রদর্শিত হয়েছিল।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে চুলের তৈরী পতাকা সদৃশ একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ইরানি নারীরা বিক্ষোভের অংশ হিসেবে চুলের পতাকা তৈরি করেছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর "Babun Mitraa" নামের ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "ইরানি মেয়েদের চুলের তৈরি পতাকা" স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টে ছবিটির ক্যাপশনে করা দাবিটি সঠিক নয়। ছবিটি ইরানি নারীদের চুলের তৈরি পতাকা নয় বরং এক বেলজিয়ান শিল্পীর তৈরী শিল্পকর্ম।
ছবিটি রিভার্স সার্চ করার পর, e-flux নামের ওয়েবসাইটে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটি সম্পর্কে লেখা হয়েছে বেলজিয়ান ভিজ্যুয়াল শিল্পী এডিথ ডেকিন্ডটের 'ইন্ডিজেনাস শ্যাডো' নামের এই শিল্পকর্মটি মার্তিনিক দ্বীপে ২০১৪ সালে প্রদর্শিত হয়েছিল। ওয়েবসাইটে ছবিটি ২০১৬ সালে আপলোড করা হয়েছে। তৎকালে ছবিটি ব্রাসেলসের একটি আর্ট গ্যালারিতে প্রদর্শিত হয়েছে বলেও জানানো হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
বিভিন্ন শিল্পকর্ম সম্পর্কে খোঁজখবর প্রকাশ করা হয় এমন একটি ওয়েবসাইট 'Argosarts.org' -এ ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানেও ছবিটি ২০১৪ সালে মার্তিনিক দ্বীপের দিয়ামান্ত উপকূলে শিল্পকর্মটি প্রদর্শিত হয়েছে উল্লেখ করে শিল্পটির পটভূমি সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। বিবরণ থেকে জানা যায়, এই স্থানে ১৮৩০ সালের ৮ ই এপ্রিল রাতে, প্রায় একশ আফ্রিকান বন্দী দাসদের বহনকারী একটি নৌকা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, শিল্পকর্মটি সেই স্মৃতির উদ্দেশ্যে প্রদর্শিত। দেখুন--
এ ছাড়াও ছবিটি শিল্প সংক্রান্ত একাধিক ওয়েবসাইটে ও স্ট্রিমিং চ্যানেলে খুঁজে পাওয়া যায়।
অর্থাৎ ছবিটি ইরানি নারীদের চুল কেটে তৈরি কোনো পতাকা নয়।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে ইরানে মাশা আমিনি নামের এক তরুণীর হিজাব আইন ভঙ্গের জের ধরে পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যুর ঘটনার পর দেশটিতে বিক্ষোভের খবর প্রকাশিত হয়েছে সংবাদমাধ্যমে।
সুতরাং বেলজিয়ান এক শিল্পীর পুরোনো শিল্পকর্মকে ইরানের সাম্প্রতিক বিক্ষোভের বলে দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।