ছবিটি পাকিস্তানে বৃষ্টি প্রার্থনা করায় গ্রেফতার কোনো ইমামের নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী আজিজুর রেহমান নামে পাকিস্তানের এই ব্যক্তি যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গ্রেফতার হন।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ থেকে পাঞ্জাবী টুপি পরিহিত এক ব্যক্তির ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ছবির ব্যক্তি একজন মসজিদের ইমাম। অনাবৃষ্টির কারনে বৃষ্টি প্রার্থনা করে নামাজ পড়ানোয় পাকিস্তানে অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে বলে তাকে গ্রেফতার করা হয়ছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর "মাজহার আল মাহদি" নামের ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "ইন্নালিল্লাহ!! উনি একজন মসজিদের ইমাম। অনাবৃষ্টির কারনে ইস্তেসকার নামাজ পড়লেন সবাইকে নিয়ে। দোয়া কবুল হয়ে বৃষ্টি নামল। কিন্তু অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা ও জানমালের সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। এজন্য পাকিস্তান সরকার তাকে গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করে।" । স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ক্যাপশনে করা দাবিটি সঠিক নয়। ছবির ব্যক্তির নাম আজিজুর রেহমান যিনি যৌন নিপিড়নের অভিযোগে ২০২১ সালে পাকিস্তানে গ্রেফতার হন।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে, ছবিটি পাকিস্তানের 'দ্য ডন' পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে "Mufti Azizur Rehman, sons arrested in separate raids" শিরোনামে একটি খবর খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২১ সালের ২০ জুন প্রকাশিত ঐ সংবাদ থেকে জানা যায়, এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মুফতি আজিজুর রেহমান নামের ঐ ব্যক্তিকে ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (সিআইএ) গ্রেফতার করে। পরে ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির তরফ থেকে আজিজুর রেহমানের দুই ছেলে আলতাফুর রেহমান এবং আতিকুর রেহমানকেও গ্রেফতারের কথাও জানানো হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
সার্চ করার পর, একই বছর ৪ অক্টোবর পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম 'জিও নিউজ'-এ " Mufti Aziz, six others formally charged with sexual assault of madrassah student" শিরোনামে আরেকটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়। এই সংবাদে মুফতি আজিজুর রেহমানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করার কথা বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, মুফতি আজিজুর রেহমান জমিয়াতুল উলেমা ইসলাম (এফ) নামের একটি দলের নেতা ছিলেন। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ছবির ব্যক্তি যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গ্রেফতার পাকিস্তানি নাগরিক আজিজুর রেহমান, বৃষ্টি প্রার্থনা করে নামাজ পড়ানোয় গ্রেফতার হওয়া কোনো ইমাম নয়।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে বৃষ্টি প্রার্থনা করে নামাজ পড়ানোয় গ্রেফতার হওয়া ইমাম দাবি করে ২০২১ সালে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গ্রেফতার পাকিস্তানি নাগরিকের ছবি প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।