ভিডিওর ব্যক্তি পার্বত্য চট্টগ্রামের নয় বরং আসামের
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ভিডিওটিতে দেখানো ব্যক্তিরা পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী নন বরং ভারতের আসামের সেনাসদস্য।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলা হচ্ছে, ভিডিওটি পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ে বসবাসরত সশস্ত্র একটি গোষ্ঠীর। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২০ সেপ্টেম্বর 'A H M Faruk' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলা হয়, "দেখুন পাহাড়ে কি পরিমান আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত নিয়মিত বাহিনীরমত সংগঠিত তারা। অথচ আন্ধাকানা সুশীল এবং কানা প্রতিবন্ধী বুদ্ধিজীবীদের কাছে তারা অসহায়, নিরীহ, গোবেচারা। এই ভিডিওর দৃশ্যেরমত পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ে পাহাড়ে ভারি ও অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। চাঁদাবাজির জন্য অপহরণ, গুম-খুন নির্যাতন চালায় সাধারণ পাহাড়ি বাঙালিদের..."। ভিডিওটিতে কয়েকজন সশস্ত্র ব্যক্তিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওতে দেখানো ব্যক্তিরা বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসী নন। তারা ভারতের আসামের অধিবাসী এবং আসামের নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য।
ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে "Sambor Rongpi" নামে একটি ফেসবুক একাউন্টে গত ১৭ জুলাই রিলভিডিও হিসেবে পোস্ট করা আলোচ্য ভিডিওটির অরিজিনাল ভার্সন খুঁজে পাওয়া যায়। ফেসবুক একাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, একাউন্টটি ভারতের কারবি আংলং থেকে পরিচালিত। কারবি আংলং ভারতের আসাম প্রদেশের একটি জেলা। একাউন্টটিতে এরআগেও একই ধরণের অনেক ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে এবং ভিডিওগুলোতে একই ব্যক্তিকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
পরবর্তীতে ওই একই একাউন্টে আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে আলোচ্য ভিডিওতে দেখানো একই ব্যক্তিকে ইউনিফর্ম পরে টহল দিতে দেখা যায়। সেখানে এক ব্যক্তিকে এই বাহিনীর পরিচয় জিজ্ঞেস করতে দেখা যায়। জবাবে একাউন্টের পরিচালনাকারী জানান, আসামের সরকারী বাহিনীর সদস্য তারা। স্ক্রিনশট দেখুন--
এবারে আলোচ্য ভিডিওটি থেকে নেয়া একটি স্ক্রিনশট (বামে) এবং উপরের ভিডিওটি থেকে নেওয়া একটি স্ক্রিনশটের (ডানে) তুলনামূলক সাদৃশ্য দেখুন--
সাম্বর রংপি নামে ওই ফেসবুক একাউন্টটি থেকে একটি সশস্ত্র সরকারি বাহিনীর ইউনিফর্ম পরে আপলোড করা অনেকগুলো ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যেসব ইউনিফর্মের সাথে আসামের স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ইউনিফর্ম, ব্যাজ ও লোগোর মিল রয়েছে।
অর্থাৎ, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওটিতে দেখানো ব্যক্তিরা বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের নন, বরং ভারতের আসামের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।
সুতরাং ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ভিডিওকে বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের ভিডিও বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।