ভারতে ছেলে সেজে দুই বোনের সেলুনে কাজ করার পুরনো খবর ভাইরাল
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ২০১৯ ভারতের উত্তরপ্রদেশের জ্যোতি ও নেহাকে নিয়ে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই খবর প্রকাশ করেছিল।
ছেলে সেজে দুই বোনের সেলুন দেয়ার ছবিসহ একটি খবর সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ ও আইডি থেকে শেয়ার করা হচ্ছে। এমন কিছু খবর দেখুন, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৪ জুলাই 'চলতি সংবাদ' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে অখ্যাত একটি অনলাইন পোর্টালের খবর পোস্ট করে লেখা হয়, "পেটের দায়ে মেয়ে থেকে ছেলে সেজে, সেলুন দিলেন দুই বোন-"। দেখুন সেই পোস্টের স্ক্রিনশট--
একই শিরোনামে প্রকাশিত খবরটিতে বলা হয়েছে,
"ভারতে উত্তর প্রদেশে প্রত্ম-ত্বত্ত একটি গ্রামে সেলুন চালান দুেই বোন। বাবা খুবই অসু'স্থ। ২০১৪ সালে পর বাবা খুবই অসু'স্থ হয়ে গেলে, সংসারের সকল দায়িত্ব এসে পরে এই দুই বোনের উপরে। উপায় না পেয়ে সংসারের হাল ধ'রতে মেয়ে থেকে ছেলে সেজে সেলুন দোকান দেন তারা। ঘ'টনাটি ঘ'টেছে উত্তর প্রদেশের প্রত্ব-ত্বত্ত একটি গ্রামে।"
খবরটির ডেটলাইনে প্রকাশের সময় লেখা আছে '4 days ago'। ফলে সাধারণভাবে পাঠকের কাছে খবরটি চার দিন আগের বলে মনে হতে পারে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পুরুষ সেজে দুই বোনের সেলুন পরিচালনার খবরটি পুরোনো।
আন্তর্জাতিক ও ভারতের একাধিক গনমাধ্যমে খবরটি ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয়। তন্মধ্যে 'Indian sisters pretend to be boys to keep barbershop afloat' শিরোনামে ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রভাবশালী বৃটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে খবরটি প্রকাশিত হয়েছিল। দেখুন খবরটির স্ক্রিনশট--
একই বছরের ২২ জানুয়ারি ভারতের ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া 'Teenage sisters become Deepak, Raju to keep father's barbershop afloat' শিরোনামে খবরটি প্রকাশ করে। খবরটিতে বলা হয়, ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের কুশিনগর জেলার বনওয়ারিটোলা গ্রামের জ্যোতি কুমারী ও নেহা কুমারীর নামের দুই বোন, বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের হাল ধরতে ছেলে সেজে বাবার রেখে যাওয়া সেলুনটি পরিচালনা শুরু করেন। এসময় তাঁরা নিজেদের দীপক ও রাজু বলে পরিচয় দিতেন। উত্তর প্রদেশের ওই এলাকায় নারী নাপিতের কাছে পুরুষেরা চুল-দাড়ি কাটাতে আগ্রহ দেখাতেন না বলে তাঁরা এই কৌশল নেন। এই জীবন সংগ্রামের জন্য তাদেরকে ভারত সরকার সম্মাননা জানিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে।
পরে ভারতের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে ২০১৯ সালের ২৫ মে একটি ফলোআপ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। দেখুন এখানে।
অর্থাৎ ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি গ্রামে পুরুষ সেজে দুই বোনের সেলুন চালানোর প্রায় আড়াই বছর আগের একটি খবর নতুন করে অপ্রাসঙ্গিকভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।