ওবায়দুল কাদেরের আটকের খবরটি ভুয়া
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের পালিয়ে গেছেন বলে একাধিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে আটক করা হয়েছে। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২ সেপ্টেমবর 'GrihoAbas-গৃহ আবাস' নামের একটি পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। যেখানে একজনকে বলতে শোনা যায়, "ওবায়দুল কাদেরকে এইমাত্র আটক করা হয়েছে। তিনি এতোদিন রাজধানীর বাড্ডায় এক আত্মীয়র বাসায় লুকিয়ে ছিলেন।" নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গ্রেফতার হননি। প্রকৃতপক্ষে, তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচ্য দাবির প্রেক্ষিতে গণমাধ্যমগুলোতে কোনো ধরণের প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি তিনি দেশে আছেন বলেও কোনো গণমাধ্যমে প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে, কি-ওয়ার্ড সার্চ করে তার পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। "দেশ ছেড়েছেন আওয়ামী লীগের অনেকেই" শিরোনামে 'প্রথম আলো'র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, "শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপর ওবায়দুল কাদের সীমান্তবর্তী এলাকায় আশ্রয় নেন। পরে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারত চলে যান। সাবেক একজন মন্ত্রী প্রথম আলোকে বলেছেন, তিনি শুনেছেন ওবায়দুল কাদের এখন দুবাই আছেন।" স্ক্রিনশট দেখুন--
"শেখ হাসিনার একদিন আগেই পালিয়েছেন ওবায়দুল কাদের" শিরোনামে 'ঢাকা পোস্টে'র একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, "আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রোববার (৪ আগস্ট) রাতে দেশত্যাগ করেছেন। তিনি বর্তমানে সিঙ্গাপুর রয়েছেন। তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, ওবায়দুল কাদের বর্তমানে নয়াদিল্লিতে অবস্থান করছেন।" স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ওবায়দুল কাদেরকে আটক করা হয়নি। বরং তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন পাওয়া গেছে।
তবে আলোচ্য ভিডিওটি কিসের, কখন এবং কোথায় ধারণ করা হয়েছে বুম বাংলাদেশ তা যাচাই করতে সক্ষম হয়নি। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় সবাই হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার আসামি। তিনি গ্রেফতার হলে স্বাভাবিকভাবেই দেশীয় গণমাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হওয়ার কথা।
সুতরাং ওবায়দুল কাদেরকে আটক করা হয়েছে বলে যে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, তা বিভ্রান্তিকর।