নতুন নয় বরং জার্মানিতে আগে থেকেই আজানের প্রচলন রয়েছে
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, জার্মানিতে আগে থেকেই আজানের প্রচলন রয়েছে, শুধু কোলন শহরের একটি মসজিদে গতবছর থেকে আজান চালু হয়।
সামাজিক মাধ্যমে ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে পোস্ট করে বলা হচ্ছে, জার্মানিতে মসজিদে আজানের অনুমতি পেল, এখন থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান শোনা যাবে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৭ এপ্রিল 'radioshongi.com' নামে একটি ফেসবুক পেজে পোস্ট করে বলা হয়, "জার্মানিতে অনুমতি পেল আজানের আজ থেকে জার্মানির প্রত্যেকটা মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান হবে 🤲আলহামদুলিল্লাহ 🤲"। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি বিভ্রান্তিকর। নতুন করে নয় বরং অনেক আগে থেকেই জার্মানির বিভিন্ন শহরে আজানের প্রচলন রয়েছে।
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন ভার্সনে ২০২২ সালের ১৩ অক্টোবর "জার্মানির কোলন শহরে আগামীকাল থেকে শোনা যাবে জুমার আজান" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কোলন শহর কর্তৃপক্ষ ও জার্মানিতে বসবাসকারী তুরস্কের নাগরিকদের সংগঠন ‘দিতিব’-এর মধ্যে একটি সাধারণ চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে মাইকে জুমার আজান দেওয়ার বিষয়টি কার্যকর করা হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়াও, জার্মানভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের বাংলা ভার্সনের ওয়েবসাইটেও ২০২২ সালের ১৫ অক্টোবর "জার্মানির সবচেয়ে বড় মসজিদে প্রথমবারের মতো আযান প্রচার" শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়,"জার্মানির বিভিন্ন শহরের মসজিদে লাউডস্পিকারে আযান প্রচারের অনুমতি রয়েছে৷ তবে কোলন কর্তৃপক্ষ এই মসজিদটিকে গত বছর প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে আযান প্রচারের অনুমতি দেয়৷ নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামী দুই বছর প্রতি শুক্রবার দুপুর দুইটা থেকে বিকেল তিনটার মধ্যে পাঁচ মিনিটের জন্য লাউড স্পিকারে আযান প্রচার করা যাবে৷ তবে শব্দসীমা হবে সর্বোচ্চ ৬০ ডেসিবেল৷" অর্থ্যাৎ আগে থেকেই দেশটিতে আজান প্রচলিত থাকলেও সেদেশের কেবল কোলন শহরে অবস্থিত জার্মানির সবচেয়ে বড় মসজিদে প্রথমবারের মতো শব্দসীমা বজায় রেখে আজান প্রচারের অনুমতি মিলেছে দেশটির মসজিদে। তবে, ওই প্রতিবেদন থেকে এটাও জানা যায় যে, কোলন কর্তৃপক্ষ এই মসজিদটিকে গত বছর প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে আযান প্রচারের অনুমতি দিলেও তখন সেই নির্দেশনা কার্যকর করা যায়নি। স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়াও ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর "German City of Cologne Allows Mosques to Broadcast Call to Prayer" শীর্ষক শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদন থেকেও জার্মানিতে আজান দেওয়ার অনুমতির ব্যাপারে জানা যায়।
অর্থাৎ জার্মানির বিভিন্ন শহরে স্বাভাবিকভাবেই আজানের প্রচলন রয়েছে কেবল কোলন শহরের দেশটির সবচেয়ে বড় মসজিদে আজান দেয়ার রীতি চালু হয় গত বছর থেকে।
সুতরাং জার্মানিতে অনেক আগে থেকেই আজান প্রচলিত থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি আজান চালু হয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।