না, ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.) কর্তৃক বেঁধে রাখা ঝুলন্ত পাথর নয় এটি
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ছবিটি মূলত ২০০৮ সালে কায়রো বিমানবন্দরের জন্য তৈরি মিশরীয় শিল্পী শাবান আব্বাসের ভাস্কর্যের।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাস্তার উপর একটি পাথর দিয়ে দড়ি বেঁধে মধ্যাকর্ষণের বিপরীতে আরেকটি পাথরকে আলাদাভাবে ঝুলিয়ে রেখেছে। দাবি করা হচ্ছে, এগুলো ১৪শ' বছর আগে ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.) কর্তৃক বেঁধে রাখা ঝুলন্ত পাথর। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি 'Řẫḱħễ Ḱoňȡoḱẫř' নামের একটি ফেসবুক আইডি ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "ঝুলন্ত পাথর দুইটি ১৪০০ বছর আগে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ {সাঃ} বেঁধে রেখেছিলেন!..🌺🕋🌺"। পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ক্যাপশনে করা দাবিটি বিভ্রান্তিকর। ছবিটি মূলত ২০০৮ সালে কায়রো বিমানবন্দরের জন্য তৈরি শাবান আব্বাস নামের মিশরীয় এক শিল্পীর একটি ভাস্কর্যের।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করা পর, ছবিটি স্টক ছবির ওয়েবসাইট অ্যালামিতে খুঁজে পাওয়া যায়। ফ্রেঞ্চ ভাষায় লেখা ছবির ক্যাপশনের স্বয়ংক্রিয় অনুবাদ করলে দেয়া যায় লেখা আছে "অপটিক্যাল ইল্যুশন ভাস্কর্য, শাবান আব্বাস, ২০০৮, টার্মিনাল ৩, কায়রো বিমানবন্দর, মিশর।" স্ক্রিনশট দেখুন--
প্রসঙ্গত শাবান মোহাম্মদ আব্বাস একজন পুরস্কার বিজয়ী ভাস্কর। ২০১০ সালের ১৭ নভেম্বর ৪১ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
পাশাপাশি, ইউটিউবেও ভাস্কর্যটির ভিডিও খুঁজে পাওয়া গেছে। ভাস্কর্যটি সম্পর্কে আগেও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়লে এক ব্যক্তি তা খণ্ডন করে ২০২১ সালের জুলাই মাসে ইউটিউবে একটি ভিডিও আপলোড করেন। যেখানে দেখা যায়, মূলত পাথরের মত দেখতে হলেও আদতে ওই পাথর সাদৃশ্য বস্তু দুটি ফাইবারের। আর দড়ি বাঁধা অংশটি লোহার তারের কাঠামো।
অর্থাৎ এটি ১৪০০ বছর আগের কোন পাথর নয়।
ভিডিওটি আগে বুম লাইভ বাংলা ছবিটি যাচাই করেছে।
সুতরাং ২০০৮ সালে তৈরি কায়রো বিমানবন্দরের জন্য মিশরীয় এক শিল্পীর ভাস্কর্যের ছবিকে বিভ্রান্তিকরভাবে ১৪শ' বছর আগে ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.) কর্তৃক বেঁধে রাখা ঝুলন্ত পাথর দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।