ছবিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোন বিল স্বাক্ষরকালের নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, প্রধানমন্ত্রীর এই ছবিটি ২০১৯ সালে নবনির্বাচত সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান থেকে তোলা।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি শিশু ধর্ষণের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে বিলে স্বাক্ষরকালের। এই দাবিতে করা কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৯ জানুয়ারি 'Monowar UL Alam Chowdhury Nobel' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে লেখা হয়,"শিশু ধর্ষণের অপরাধে সরাসরি মৃত্যুদন্ডের বিধানে সই করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা .....Thankyou Prime Minister, this is exactly how it should be...agreed Artistas? No mercy for child rapist"। স্ক্রিনশটে দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ছবির বর্ণনায় করা তথ্য বিভ্রান্তিকর। মূলত, ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য বইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষরের এই ছবিটি তৎকালে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে, ছবিটি বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো'তে ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি "চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শেখ হাসিনা" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে খুঁজে পাওয়া যায়। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর সৌজন্যে প্রকাশিত ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার পর সংসদ সদস্য বইয়ে স্বাক্ষর করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।" স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া, দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস-এর একটি প্রতিবেদনেও ছবিটি একই সূত্র উল্লেখসহ খুঁজে পাওয়া গেছে।
আইনটিও পুরোনো:
কিওয়ার্ড সার্চ করার পর, মূলধারার গণমাধ্যমে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে ধর্ষণ মামলার বিচারে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন পাশ হওয়ার একাধিক প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। তন্মধ্যে, বিবিসি বাংলায় ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর "ধর্ষণের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড: নতুন অধ্যাদেশে কী বলা হয়েছে?" শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, "বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশে সই করেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের ফলে সংশোধিত আইনটি এখন থেকেই কার্যকর হিসেবে জারি হল। ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভের পর সোমবার আইনের সংশোধনীটি অনুমোদন করে বাংলাদেশের মন্ত্রিসভা।" প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ আইনটি পুরোনো, ২০২২ সালের এই প্রতিবেদন প্রকাশ পর্যন্ত শুধুমাত্র শিশু ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নতুন কোন আইন পাশ হয়নি।
সুতরাং ২০১৯ সালে নবনির্বাচত সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তোলা প্রধানমন্ত্রীর ছবিকে ভিন্ন দাবিতে পোস্ট করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।