ফেক নিউজ
শিশুর ছবি ব্যবহার করে রোহিঙ্গা বিদ্বেষী ভুয়া খবর প্রচার
ছবির শিশুটি নিয়ে বিবিসি এরকম কোন সংবাদ প্রকাশ করেনি বলে নিশ্চিত হয়েছে বুম বাংলাদেশ।
সামাজিক মাধ্যমে প্রচার পাওয়া একটি ছবির সাথে ক্যাপশনে লেখা রয়েছে– ''নিকুচি করি শিশু ধর্ষক মুসলিম ধর্ম ও শরিয়া কানুনের।😢😢👆🏽 এই ১৪ বছরের রোহিঙ্গা বালিকাটির ২ টি বাচ্চা, প্রথমটি ২ বছরের, দ্বিতীয়টির বয়স ৫ মাস -- মেয়েটির স্বামীর বয়স ৫৬ বছর, আর মেয়েটি তার স্বামীর ৬ নং ও সবচেয়ে কনিষ্ঠ স্ত্রী -- আগের পক্ষের ৫ স্ত্রীর তরফে মোট ১৮ টি বাচ্চা ইতিমধ্যেই বর্তমান, আর এই মিষ্টি পরিবারটি মায়ান্মারের রাখাইন প্রদেশের বাসিন্দা -- এখন প্রশ্ন হলো, আপনি কি এমন শরনার্থীকে ভারতবর্ষের মাটিতে ঠাঁই দিতে প্রস্তুত ?
(সংবাদ সূত্র BBC ও ইন্টারনেট)''
ছবিটির উপরে কোনার দিকে 'বিবিসি নিউজ' লেখা রয়েছে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশে ছবিটির সত্যতা জানতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০১৯ সালের বেশ কিছু ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিবেদন পাওয়া যায়। যেখানে এই খবরটিকে ভিত্তিহীন দাবী করে জানানো হয়েছে ছবির মেয়েটি ২ সন্তানের মা এই দাবীটির কোনো সতত্য পাওয়া যায়নি এবং বিবিসিও তাদের প্রতিবেদনে এরকম কোন দাবী করেনি।
প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায় ছবিটি ভারতে সামাজিক মাধ্যমে ২০১৭ সাল থেকেই রোহিঙ্গা মুসলিম বিরোধী প্রচারণায় ব্যবহার করা হচ্ছে।
মূলত ছবিটি বিবিসির সাংবাদিক সঞ্জয় মজুমদারের মায়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে করা একটি প্রতিবেদন থেকে নেয়া। ২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বিবিসি নিউজের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রতিবেদনটি আপলোড করা হয়।
ভিডিওটি দেখুন এখানে।
ভিডিওটি প্রতিবেদনটির ২ মিনিট ৬ সেকেন্ডে মেয়েটিকে দেখা যায়। তখন শরণার্থী রোহিঙ্গাদের জন্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ২নং উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাময়িকভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হয়।
তবে প্রতিবেদনটির কোথাও ফেসবুকে ছড়ানো পোস্টের মত দাবী করা হয়নি যে, শিশুটির দুটি বাচ্চা রয়েছে এবং সে তার স্বামীর ৬ষ্ঠ স্ত্রী। ভিডিওটিতে কেবল দেখা যায় অন্য বাচ্চাদের সাথে এই মেয়েটি একটি ছোট শিশুকে কোলে নিয়ে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে।
ছবিটি নিয়ে বিবিসি বরাতে ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছিলো মর্মে স্বয়ং বিবিসিও একটি ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিবেদন তাদের হিন্দি ভার্সনে প্রকাশ করেছিলো সেসময়। সেখানেও স্পষ্ট করে বলা হয়েছে বিবিসির তরফ থেকে এমন কোনো খবরই প্রকাশ করা হয়নি।
সুতরাং বিবিসির বরাতে ছড়ানো ছবির পেছনের দাবীগুলো ভিত্তিহীন ।
Claim : ১৪ বছরের রোহিঙ্গা বালিকা ২ বাচ্চার মা; সে স্বামীর ৬ নং স্ত্রী
Claimed By : Facebook Post
Fact Check : False
Next Story