বুর্জ খালিফার আলোকসজ্জায় হিন্দু দেবতার ছবিটি এডিট করা
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, হিন্দু দেবতার এই ছবিটি ফটোশপে এডিট করে আমিরাতের দুবাইয়ের বুর্জ আল খলিফার আলোকসজ্জায় বসানো হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ ও আইডি থেকে একটি ছবি ও ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের বুর্জ আল খলিফায় আলোকসজ্জার মাধ্যমে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেবতার প্রতিকৃতি প্রদর্শন করা হয়েছে। এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২ এপ্রিল "Rajesh Nath Hp" নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "দুবাইয়ের বুকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ বড়ো বিল্ডিংয়ে বুঝখলিফা মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রী রাম চন্দ্রের মুর্তি সারা বিশ্বে সনাতনী রাজ করবে শুধু সময়ের অপেক্ষা করুন মোল্লার শান্তি ছেলেরা।" ভিডিওতে একটি স্থির ছবি দেখা যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওতে দেখতে পাওয়া ছবিটি এডিট করা হয়েছে।
সাধারণত বুর্জ খালিফার আলোকসজ্জায় গুরুত্বপূর্ণ কোনো ছবি প্রদর্শনী হলে তা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হবার কথা। কিন্তু একাধিক সার্চ করার পরেও সেখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেবতা রামের ছবি প্রদর্শিত হওয়ার খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতে দেখা যায়নি। আরও নিশ্চিত হতে বুর্জ আল খলিফার অফিশিয়াল ফেসবুক যাচাই করা হলে সেখানেও আলোচ্য ভিডিওর অনুরূপ কোনো আলোকসজ্জার কোনো নজির পাওয়া যায়নি। সাধারণত, বুর্জ আল খালিফায় গুরুত্বপূর্ণ কোনো ছবি প্রদর্শিত হলে এর আপডেট ফেসবুক পেজে দেওয়া হয়।
পেজে প্রকাশিত সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী গত ২৬ মার্চ বুর্জ আল খলিফায় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসকে সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা প্রদর্শন করা হয়েছে এবং ২ এপ্রিল বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষ্যে সচেতনতামূলক বার্তা দেয়া হয়েছে।
ছবিটি এডিট করা
আলোচ্য ভিডিওটি থেকে কী ফ্রেম নিয়ে রিভার্স সার্চ করার পর স্টক ছবির একাধিক ওয়েবসাইটে আলোচ্য ভিডিওতে ব্যবহার করা মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া গেছে। মূলত এই ছবিকেই এডিট করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেবতার ছবি যুক্ত করা হয়েছে, যা ব্যবহার হয়েছে ভিডিওতে। স্টক ছবির ওয়েবসাইট এডোবি স্টকে পাওয়া মূল ছবি (ডানে) ও আলোচ্য ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশটের তুলনা দেখুন--
অর্থাৎ নিশ্চিতভাবেই ছবিটি এডিট করা।
সুতরাং সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের বুর্জ আল খলিফায় আলোকসজ্জায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেবতাকে প্রদর্শন করা হয়েছে দাবি করে এডিট করা ছবি ও ভিডিও প্রচার হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।