ছবিটি ভারতের অভিনভ নামের এক শিশুর, সাহায্যের আবেদনটি ভুয়া
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ভারতীয় শিশু অভিনভের ছবিকে বাংলাদেশের ইমন দাবি করে আর্থিক সাহায্য চাওয়া হয়েছে, যা প্রতারণাপূর্ণ।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একটি অসুস্থ শিশু ও তার অভিভাবকের ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, শিশুটির নাম 'ইমন'। আর পরিচয় হিসেবে শিশুটি ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানার ইয়ারপুর ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার মোহাম্মদ মিকাইল হোসেনের ছেলে উল্লেখ করা হয়েছে। পোস্টটিতে বলা হয়েছে, শিশুটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে এবং তার অসুস্থতা বৃদ্ধি পাচ্ছে । আর্থিক সাহায্য পাঠানোর জন্য মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেন সেবা দাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও নগদ নম্বরও জুড়ে দেয়া হয়েছে পোস্টটিতে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৩০ অক্টোবর 'Jannat Toma' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে করা এরকম একটি পোস্ট নিচের স্ক্রিনশটে দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টের বর্ণনায় করা দাবিটি বিভ্রান্তিকর ও প্রতারণাপূর্ণ।
মূলত, অভিনভ নামে ভারতীয় এক শিশুর ছবি দিয়ে বাংলাদেশের ইমন বলে দাবি করা হচ্ছে। পাশাপাশি, ভাইরাল পোস্টে যুক্ত করা একটি মুঠোফোন নম্বর শিশুটির পিতার নয় বলে জানান এর ব্যবহারকারী।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ভারতের তহবিল সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান মিলাপ-এর ( www.Milaap.org) ওয়েবসাইটে "3-Year-Old With Watermelon Sized Tumour On His Stomach Needs Urgent Treatment' শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়। এতে বলা হয়, ছবির এক বছর বয়সী শিশুটির নাম অভিনভ, পিতা-মাতার নাম অভিনাশ ও আশ্বীনী। শিশুটি Ewing's Sarcoma নামের একটি রোগে আক্রান্ত।
পাশাপাশি, ক্রাউডফাইন্ডিং প্ল্যাটফর্ম মিলাপ-এর (Milaap) অফিশিয়াল ফেসবুক একাউন্টেও গত বছরের জানুয়ারি মাসে শিশুটির জন্য অর্থ সহায়তা চেয়ে পোস্ট করতে দেখা গেছে। দেখুন--
অর্থাৎ নিশ্চিতভাবেই ছবিটি বাংলাদেশি কোন শিশুর নয়। পোস্টগুলোতে সহযোগিতা পাঠানোর জন্য দেয়া নম্বরগুলোতে যোগাযোগ করা হলে একটি নাম্বার থেকে কল রিসিভ করে নম্বরটা মিকাইল নামে কারো নয় বলে জানানো হয় এবং অন্য নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে ইমন নামের বাংলাদেশের কোন শিশু সত্যিই রোগাক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে কিনা বা তার আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন কিনা, সে বিষয়ে বুম বাংলাদেশে আলাদাভাবে যাচাই করেনি।
সুতরাং, ভারতীয় শিশুর ছবি জুড়ে দিয়ে তাকে বাংলাদেশি শিশু দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য তথ্য ছাড়াই আর্থিক সহায়তার আবেদন জানানো হচ্ছে, যা প্রতারণাপূর্ণ।