প্যারাসিটামল ঔষধে ভাইরাস থাকার দাবিটি ভিত্তিহীন
সামাজিক মাধ্যমে দাবিটি নানাসময়ে ভাইরাল হলেও একাধিক দেশ এটিকে গুজব বলে চিহ্নিত করেছে।
ফেসবুকে নানাসময়ে ভাইরাল হওয়া একটি পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, প্যারাসিটামল P-500 নামক ঔষধে ম্যাচাপু নামক ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। দেখুন এমন কিছু পোস্ট এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি Unique Ctg নামের পেইজ থেকে ছবিসহ একটি পোস্ট করা হয় যার ক্যাপশনে বলা হয়, প্যারাসিটামল P-500 নামের একটি ঔষুধে 'ম্যাচাপু' নামের একটি ভাইরাস পাওয়া গেছে।এটি খাওয়ার পরপরই ব্যক্তির শারীরিক অবকাঠামাে এবং পুরাে শরীরটাতে পচন ধরে যাবে।
দেখুন পোস্টটির একটি স্ক্রিনশট--
একই দাবি পূর্বেও নানাসময়ে ফেসবুকে প্রচার হতে দেখা গেছে। ২০১৭ সালের একটি পোস্ট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ দাবিটি যাচাই করে দেখেছে, প্যারাসিটামল ঔষধে 'ম্যাচাপু' নামের ভাইরাস থাকার দাবিটি ভিত্তিহীন। প্রথমত, ভাইরাসটির প্রকৃত নাম 'ম্যাচুপো' যেটি Bolivian Hemorrhagic Fever (BHF) ভাইরাস নামেও পরিচিত। উক্ত ভাইরাসটি সম্পর্কে ভারতের ইন্ডিয়া টাইমসের একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, ভাইরাসটি মূলত সরাসরি সংস্পর্শে অন্য দেহে সংক্রমিত হয় এবং ভাইরাসটি এখন পর্যন্ত কেবলমাত্র দক্ষিণ আমেরিকায় সংক্রমিত হতে দেখা গেছে।
দ্বিতীয়ত, প্যারাসিটামল P-৫০০ নামক ট্যাবলেটে এমন কোনো ভাইরাসের উপস্থিতির প্রমান পাওয়া যায়নি। ২০১৭ সালে মালয়েশিয়ার সামাজিক মাধ্যমগুলোতে একই দাবি ছড়িয়ে পড়লে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সেটিকে ভিত্তিহীন বলে নিশ্চিত করে। দেখুন এ ব্যাপারে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের একটি খবরের স্ক্রিনশট--
একই বছর সিঙ্গাপুরের সরকারি 'হেলথ সাইন্স অথোরিটি' থেকেও প্যারাসিটামল ট্যাবলেটে ভাইরাস প্রাপ্তির দাবিটি নাকচ করে দেয়া হয়। দেখুন উক্ত ঘোষণাটির একটি স্ক্রিনশট-
এছাড়া বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত 'ম্যাচুপো' বা বিএইচএফ(Bolivian Hemorrhagic Fever) ভাইরাসের উপস্থিতি কিংবা সংক্রমণের কোনো তথ্য-প্রমাণ মূলধারার সংবাদমাধ্যমে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ সামাজিক মাধ্যমে নানা সময়ে ভাইরাল হওয়া প্যারাসিটামল P-500 ঔষধে 'ম্যাচুপো ভাইরাস' থাকার দাবিটি ভিত্তিহীন।