বিভ্রান্তিকর শিরোনামে প্রধানমন্ত্রীর বরাতে খবর প্রকাশ
অনলাইন পোর্টালের শিরোনামে ভুলভাবে 'ইসলামী আইনে ধর্ষণের শাস্তি দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর' বলে দাবি করা হয়েছে
publicvoice24.com নামে একটি অনলাইন পোর্টালে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়েছে, "ইসলামী আইনে ধর্ষণের শাস্তি দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর"।
প্রতিবেদনটির আর্কাইভ লিংক দেখুন এখানে।
অনলাইন পোর্টালটির ফেসবুক পেইজেও খবরটি শেয়ার করা হয়েছে। দেখুন এখানে।
এই খবরটি অন্যান্য গ্রুপ ও পেইজেও তাৎক্ষণিকভাবে ছড়িয়ে পড়ে "ব্রেকিং নিউজ" আকারে। দেখুন একটি স্ক্রিনশট--
publicvoice24.com এর প্রতিবেদনের প্রথম দুটি প্যারায় লেখা হয়েছে--
"প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বর্তমান আইনে ধর্ষণের সাজায় পরিবর্তন এনে তা মৃত্যুদণ্ড করা হচ্ছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আগামী ১২ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রস্তাব তোলা হবে। সোমবার (১২ অক্টোবর) এই প্রস্তাব উত্থাপিত হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।"
এরপর দীর্ঘ প্রতিবেদনে ধর্ষণের শাস্তি সম্পর্কে বাংলাদেশের আইনে কী বলা হয়েছে এবং ইসলামী শরিয়ার দৃষ্টিতে কোন মাযহাবে কী বিধান রয়েছে তার একটি বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে। তবে উপরের দুটি প্যারার বাইরে এ বিষয়ে 'প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ' এবং আইন মন্ত্রীর বক্তব্য সংক্রান্ত আর কোনো তথ্য/বক্তব্য নেই।
ফ্যাক্ট চেক:
প্রথমেই দেখা যাচ্ছে, publicvoice24.com এর প্রতিবেদনের শিরোনাম এবং ভেতের টেক্সটের মধ্যে কোনো মিল নেই। শিরোনামে "ইসলামী আইনে ধর্ষণের শাস্তি দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর" বলা হলেও প্রতিবেদনের ভেতরে "ইসলামী আইনে ধর্ষণের শাস্তি দেয়ার নির্দেশ" দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী- এমন কথা পাওয়া যাচ্ছে না আইনমন্ত্রীর বক্তব্যে।
দ্বিতীয়ত, আইনমন্ত্রীর এ সংক্রান্ত বক্তব্য বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) দেশের শীর্ষ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে। কোথাও "ইসলামী আইনে ধর্ষণের শাস্তি দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর" এমন বক্তব্য আইনমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে কোথাও প্রকাশিত হয়নি।
দেখুন বিডিনিউজ, যুগান্তর, বাংলাট্রিবিউন এবং ঢাকা ট্রিবিউনের প্রতিবেদনগুলো। publicvoice24.com শিরোনামটি গুগলে সার্চ করে অন্য কোনো সংবাদসূত্র থেকেও এ ধরনের কোনো বক্তব্য/তথ্য খুজে পাওয়া যায়নি।
সব সংবাদমাধ্যমেই "প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার" উদ্যোগ/প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সরকারি বার্তা সংস্থা বাসস-এর ওয়েবসাইটে বৃহস্পতিবারের সবগুলো প্রতিবেদন ঘেটে দেখা গেছে আইনমন্ত্রীর এ সংক্রান্ত কোনো বক্তব্যের ওপর কোনো প্রতিবেদন সেখানে প্রকাশিত হয়নি।
শিরোনামে উল্লেখিত "ইসলামী আইনে ধর্ষণের শাস্তি দেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর" বক্তব্যটি publicvoice24.com কোথায় পেয়েছে, আইনমন্ত্রী নিজে অনলাইন পোর্টালটিকে বলেছেন কিনা- এসব কোনো কিছুর উল্লেখ না থাকা, শিরোনামের সাথে মূল প্রতিবেদনের মিল না থাকা এবং প্রকাশিত অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশ প্রদানের তথ্য না পাওয়া- সব মিলিয়ে আলোচ্য শিরোনামটি বিভ্রান্তিকর হিসেবে চিহ্নিত করেছে বুম বাংলাদেশ।