ভিডিওটি পুরোনো, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইফতার নিয়ে সংঘর্ষের খবর ভিত্তিহীন
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ভিডিওটি ৫ বছর পুরোনো এবং সম্প্রতি ইফতার আয়োজন নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষের খবরও পাওয়া যায়নি।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ইফতারি আয়োজন'কে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শুরু হয় সংঘর্ষের দৃশ্য এটি। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৮ এপ্রিল 'Moja Losss?' নামের ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয়, "ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী টেটা যুদ্ধ!!!ইফতারি আয়োজন'কে কেন্দ্র করে শুরু হয় ভয়ানক ঝগড়া"। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওটি ৫ বছর পুরোনো আর পোস্টে করা দাবিটিও ভিত্তিহীন।
ভাইরাল ভিডিও থেকে কি-ফ্রেম কেটে সার্চ করার পর, "Brahmanbaria Tv" নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ফেসবুকে ভাইরাল ভিডিওর হুবহু পুরোনো ভার্সন খুঁজে পাওয়া গেছে। "সংর্ঘষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ রনক্ষেত্র, আহত ২০" শিরোনামে ২০১৭ সালের ২৯ নভেম্বর পোস্ট করা ভিডিওটির বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের শরীফপুরে দু-দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষের দৃশ্য এটি।
ইউটিউব ভিডিও থেকে নেয়া স্ক্রিনশট এবং বিভ্রান্তিকর ফেসবুক ছবিটি পাশাপাশি তুলনা দেখুন--
এই সূত্র ধরে সার্চ করার পর, অনলাইন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম জাগোনিউজ২৪ ডটকমে ২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর "আশুগঞ্জে দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ" শিরোনামে এই ঘটনা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে দেখা যায়। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, "তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেল চারটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ তারুয়া গ্রামের দুই পক্ষের লোকজনদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম জানা যায়নি। তাদেরকে স্থানীয় ও জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।" প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওটি ৫ বছর পুরোনো একটি সহিংসতার, সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার নয়।
আবার ইফতার নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে কোনো সংঘর্ষ হয়েছে কি না তা জানতে একাধিকবার সার্চ করা হলেও দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে এমন কোনো খবর খুঁজে পাওয়া যায়নি। আরও নিশ্চিত হতে বুম বাংলাদেশ স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করলে তারাও সম্প্রতি এরকম কোনো ঘটনার কথা নাকোচ করে দেন।
সুতরাং ৫ বছরের পুরোনো ভিডিও পোস্ট করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইফতার নিয়ে সংঘর্ষের খবর প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা সম্পূর্ন ভিত্তিহীন।