ছবিটি মায়ের কিডনি দানের মাধ্যমে বেঁচে যাওয়া সালাহউদ্দিনের নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ছবিটি সাইফুল ইসলাম নামের ভিন্ন এক কিডনি রোগীর, ২০২০ সালে একাধিক গণমাধ্যমে এটি প্রকাশিত হয়েছিল।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছবিসহ একটি খবর শেয়ার করে বলা হয়, কক্সবাজারে সালাহউদ্দিন নামের সদ্যবিবাহিত ছেলেকে কিডনি দিয়ে বাঁচালেন মা মর্তুজা বেগম। এমন কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৩ আগস্ট 'Amar Songbad' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে একটি খবরের লিংক শেয়ার করে বলা হয়, 'মায়ের কোন তুলনা হয়না নিজের কি'ডনি দিয়ে সদ্য-বিবাহিত ছে'লেকে বাঁ'চালেন গর্ভ-ধারিনী মা'। হুবহু একই রকম শিরোনামে গত ৪ আগস্ট প্রকাশিত খবরটিতে বলা হয়, কক্সবাজারের পেকুয়ায় সালাহউদ্দিন নামক এক প্রবাসী তরুণের দুটি কিডনি বাতিল হয়ে যায়। পরবর্তীতে তার মা মর্তুজা বেগম একটি কিডনি দান করলে তা প্রতিস্থাপন করা হয়। এখন মা-ছেলে উভয়ই সুস্থ আছেন বলে জানান, চিকিৎসক শোয়াইব নোমানী। উক্ত খবরটির সাথে একটি ছবিও প্রকাশ করা হয় যেখানে হাসপাতালের বেডে মাস্ক-পরিহিত এক যুবককে শুয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। দেখুন সেই পোস্টের স্ক্রিনশট--
পোস্টটির আর্কাইভ দেখুন এখানে। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া প্রতিবেদনটির আর্কাইভ আছে এখানে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ছবিটি কিডনি রোগী সালাহউদ্দিন নামের যুবকের নয়, ভিন্ন এক ব্যক্তির। গুগল সার্চ করে দেখা গেছে, ছবিটি মূলত চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা খায়রুল আলমের ছেলে সাইফুল ইসলামের। ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত এক খবরে এই ছবিটি পাওয়া যায়। দেখুন সেই খবরের স্ক্রিনশট--
'মায়ের দেয়া কিডনি প্রতিস্থাপনে প্রয়োজন ১৫ লক্ষ টাকা' শিরোনামের এই খবরটিতে বলা হয়, মারাত্মক কিডনি রোগে আক্রান্ত সাইফুলের কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেয়া হলে তার মা নুরুন্নিসা বেগম কিডনি দিতে রাজি হন। তবে কিডনি প্রতিস্থাপনে প্রায় ১৫ লাখ টাকা দরকার বলে আর্থিক সাহায্যও চাওয়া হয় সেই প্রতিবেদনে।
এছাড়া চট্টগ্রামভিত্তিক স্থানীয় প্রভাবশালী পত্রিকা দৈনিক আজাদীতেও খবরটি ২০২০ সালের ২৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে।
এছাড়া তৎকালে আরেকটি অনলাইন পোর্টালেও খবরটি ছবিসহ প্রকাশিত হয়েছিল। দেখুন ডেইলি বাংলাদেশে প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনটি--
ডেইলি বাংলাদেশ পত্রিকার খবরটি পড়ুন এখানে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভাইরাল হওয়া প্রতিবেদনটিতে কক্সবাজারের পেকুয়ার নিবাসী সালাহউদ্দিনকে তার মা মর্তুজা বেগমের কিডনি দেয়ার খবরটিও একাধিক অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছিল। দৈনিক 'আমাদের সময়' এ খবরটি প্রকাশিত হয়েছে গত ২৯ জুলাই, ২০২১। দেখুন সেই প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট-
'ছেলেকে বাঁচাতে কিডনি দিলেন মা' শিরোনামের সেই প্রতিবেদনটিতে সেই সালাহউদ্দিনের ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া কক্সবাজারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম 'কক্সবাজার জার্নাল ডটকম' এও খবরটি একইদিনে প্রকাশিত হয়। দেখুন এখানে--
প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে।
অর্থাৎ, কক্সবাজারে মায়ের কিডনি সন্তান সালাহউদ্দিনকে দান করে সুস্থ করে তোলার খবরটি সঠিক হলেও খবরের ছবিটি পুরনো এবং সাইফুল ইসলাম নামের ভিন্ন এক ব্যক্তির।