ভারতীয় গ্রামে ৪০০ বছর ধরে সন্তান জন্ম না হওয়ার খবরটি পুরোনো
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ২০১৮ সালে ভারতের মধ্যপ্রদেশের রাজগরের শঙ্খ শ্যাম জি গ্রাম নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে খবরটি প্রকাশিত হয়।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে অখ্যাত অনলাইন পোর্টালের লিংক শেয়ার করে, ৪০০ বছরে কোনো শিশুর জন্ম না নেয়া ভারতীয় একটি গ্রামের খবর প্রচার করতে দেখা গেছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৫ নভেম্বর "Voyage of World" নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে অনলাইন পোর্টালের লিংক পোস্ট করে লেখা হয়, "অভিশপ্ত গ্রাম, ৪০০ বছরে জন্ম নেয়নি একটি শিশুও" । স্ক্রিনশট দেখুন--
হুবহু একই শিরোনামে প্রকাশিত অনলাইন পোর্টালের খবরটিতে ডেটলাইন "2 days ago" এবং খবরে মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের রাজগরের ওই গ্রামটির নাম 'শঙ্খ শ্যাম জি' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, খবরটি সাম্প্রতিক নয় বরং ৩ বছর আগের।
২০১৮ সালে ভারতের একাধিক গণমাধ্যমে এই খবরটি প্রকাশিত হয়েছিল। তন্মধ্যে '400 বছর ধরে কোনো মহিলা তাদের সন্তানকে জন্ম দেননি এই গ্রামে' শিরোনামে ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম এনডিটিভি-এর বাংলা সংস্করণে, ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের রাজগরের শঙ্খ শ্যাম জি গ্রাম সম্পর্কে বার্তা সংস্থা এএনআই-এর বরাতে খবরটি প্রকাশিত হয় ২০১৮ সালের ১১ মে। এনডিটিভি বাংলায় প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়-
"400 বছর হয়ে গেছে, মধ্যপ্রদেশের এই গ্রামে কোনো নারী সন্তানকে জন্ম দেননি। সেখানকার মানুষ বিশ্বাস করেন যে তাদের গ্রাম টি অভিশপ্ত এবং সেখানে যদি কোনো নারী তার সন্তান কে জন্ম দেন তাহলে হয় সন্তানের মায়ের মৃত্যু ঘটবে নয়তো মা বা তার সন্তানের মধ্যে কেউ কদাকার আকার ধারণ করবে।
ভোপাল থেকে 130 কিলোমিটার দূরত্বে রাজগরের শঙ্খ শ্যাম জি গ্রামে মহিলাদের জম্ম দেওয়ার নিয়ম নেই, যদিও কোনো লিখিত আইন নেই এই বিষয়ে। জন্ম দিতে গেলে তাদের গ্রাম পেরিয়ে জন্ম দিতে হবে যদি তারা তাদের নিজের ও তাদের বাচ্চার সুস্থ জীবন কামনা করে, এমনটাই গ্রামের মানুষ বিশ্বাস করেন।" এটি স্রেফ সাধারণের বিশ্বাস বলেও জানানো হয় খবরটিতে। মূল খবরের স্ক্রিনশট দেখুন--
সার্চ করার পর, "Child not born in 'cursed' MP village for 400 years" শিরোনামে প্রকাশিত বার্তা সংস্থা এএনআই-এর মূল খবরটিও খুঁজে পাওয়া গেছে যা ২০১৮ সালের ১০ মে প্রকাশ করেছিলো সংস্থাটি। পাশাপাশি তৎকালে একই সূত্রের বরাতে খবরটি ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এবং নিউজ১৮-সহ মূলধারার একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হতে দেখা গেছে। এএনআই-এর খবরের স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ তিন বছর আগের একটি খবর কোনো তথ্য পরিমার্জন না করেই অপ্রাসঙ্গিকভাবে নতুন খবর হিসাবে প্রকাশ করা হচ্ছে অনলাইন পোর্টালে, যা বিভ্রান্তিকর।