মোবাইল চার্জিংয়ের সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে যুবকের মৃত্যুর খবরটি ২০১৯ সালের
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, থাইল্যান্ডের এ সংক্রান্ত খবরটি ডেইলি মেইলসহ একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৯ সালে।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে সম্প্রতি একটি খবর শেয়ার করে বলা হচ্ছে, চার্জে দেয়া মোবাইল থেকে বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় মারা গেছেন এক যুবক। দেখুন এমন তিনটি ফেসবুক পোস্ট এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৪ জুলাই 'Dhaka Barta' নামের একটি ফেসবুক পেজে একটি খবরের লিংক পোস্ট করে বলা হয়, "বিছানায় মোবাইল চার্জে রেখে ঘুম, বিদ্যুতায়িত হয়ে চিরঘুমে যু,ব,ক"। অযাচিত যতিচিহ্ন ব্যতিরেকে একই রকম শিরোনামে প্রকাশিত ওই খবরে বলা হয়, গত সোমবার এই ঘটনা ঘটেছে থাইল্যান্ডের নাখন রাতচ্যাশিমা প্রদেশে। বৃটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইলের বরাত দিয়ে খবরটিতে আরো বলা হয়, সেখানে ২২ বছরের এক যুবক চার্জে দেয়া মোবাইল থেকে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায়। এছাড়া খবরের সাথে হাত-পা ছড়িয়ে চিৎ হয়ে শায়িত এক ব্যক্তির ছবি চেহারা ব্লার করে প্রকাশ করা হয়। দেখুন সেই খবরের স্ক্রিনশট--
প্রতিবেদনটির আর্কাইভ দেখুন এখানে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, খবরটি পুরনো। ২০১৯ সালের ৩০ মে ডেইলি মেইলে 'Man, 22, is electrocuted to death while charging his phone in bed in Thailand' শিরোনামে খবরটি প্রকাশিত হয়েছিল। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সোমবার রাতে থাইল্যান্ডের ন্যাখন রাতচাসিমা প্রদেশে ঘটনাটি ঘটে, অর্থাৎ ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২৭ মে ২২ বছর বয়সী ওই যুবক চার্জে দিয়ে বিছানায় রাখা মোবাইল থেকে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান। খবরটিতে সেই যুবকের কোন ছবি কিংবা নাম পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি। দেখুন ডেইলি মেইলের সেই প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট--
তবে প্রতিবেদনটির শেষাংশে বলা হয়, ঘটনাটি এমন এক সময় ঘটল, যার কয়েকমাস আগে দেশটির ফান থং প্রদেশের ছোনবুড়ি এলাকায় চার্জে দেয়া মোবাইল থেকে কানে ইয়ারফোন লাগানো অবস্থায় বিদ্যুতায়িত হয়ে আরেক যুবকের মৃত্যু হয়। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মারা যাওয়া সেই যুবকের নাম ক্রিতসাদা সুপল, যার বয়স ২৪ বছর বলে উল্লেখ করা হয়। ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনটিতে ক্রিতসাদার মরদেহের ছবি ক্যাপশন সহ দেয়া হয়েছে। যে ছবিটি আলোচ্য ফেসবুক পোস্ট ও খবরে ব্যবহার করা হয়েছে। দেখুন স্ক্রিনশট--
এছাড়াও খবরটিতে ক্রিতসাদা সুপলের মরদেহ উদ্ধার সংক্রান্ত একটি ভিডিও জুড়ে দিয়েছে ডেইলি মেইল। ভিডিওটির এক মিনিট থেকে ক্রিতসাদা সুপলের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। দেখুন স্ক্রিনশট--
ভিডিওসহ ডেইলি মেইলের পুরো প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে। এছাড়া ২০১৯ সালের একই সময়ে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে।
অর্থাৎ নাম পরিচয় ও ছবি বিহীন ২২ বছরের যুবকের সংবাদের সাথে কয়েক মাস আগের একই রকম একটি ঘটনায় মারা যাওয়া ২৪ বছর বয়সী ক্রিতসাদা সুপল নামের আরেক যুবকের ছবি কোন ক্যাপশন ছাড়া বিভ্রান্তিকরভাবে জুড়ে দেয়া হয়েছে ফেসবুকে ভাইরাল খবরটিতে।
অতএব, ২০১৯ সালের মে মাসের একটি ঘটনার প্রতিবেদনের সাথে এর কয়েক মাস আগের আরেকটি ঘটনার ছবি জুড়ে দিয়ে নতুন খবর হিসেবে প্রকাশ করে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।