২০১৯ সালের অপসারণযোগ্য হিজাব আবিস্কারের খবরকে বিভ্রান্তিকরভাবে প্রকাশ
সাময়িক ব্যবহারযোগ্য হিজাব আবিস্কারের খবরকে যুক্তরাজ্যে হিজাব পরার অনুমতি প্রদানের খবর বলে প্রচার করা হচ্ছে একাধিক অনলাইন পোর্টালে।
সামাজিক মাধ্যমে একটি খবরে দাবি করা হয়, যুক্তরাজ্যের হাসপাতালে মুসলিম নারী চিকিৎসকরা হিজাব পড়বার অনুমতি পেয়েছে। দেখুন সেই খবরের লিঙ্ক এখানে, এখানে এবং এখানে।
দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার অনলাইনে গত ৭ জানুয়ারি একটি খবর প্রকাশিত হয় যার শিরোনাম ছিল, 'হিজাব পরার অনুমতি পেলো যুক্তরাজ্যের রয়েল ডার্বি হাসপাতালের মুসলিম নারী চিকিৎসকরা'। হাসপাতালের তৈরি সাময়িক ব্যবহারযোগ্য ও জীবাণুমুক্ত হিজাব অপারেশন থিয়েটারে পরিধান করা যাবে। দেখুন খবরের স্ক্রিনশট--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, উক্ত খবরটি পুরানো এবং বিভ্রান্তিকরভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। প্রথমত, রয়েল ডার্বি হাসপাতালে তৈরিকৃত সাময়িক ব্যবহারযোগ্য এবং জীবানুমুক্ত যে হিজাব আবিস্কারের কথা বলা হয়েছে, সে খবরটি ২০১৯ সালের। "Royal Derby Hospital: Disposable sterile hijabs introduced" শিরোনামে বিবিসির একটি খবর দেখা যায় যেটি প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর। দেখুন স্ক্রিনশট--
বিবিসির সেই খবর মারফত জানা যায়, ফারাহ রোজলান নামের একজন মালয়েশিয়া-বংশোদ্ভুত চিকিৎসক সাময়িক ব্যবহারযোগ্য এবং জীবানু-মুক্ত হিজাব আবিস্কার করেছেন। যুক্তরাজ্যের রয়াল ডার্বি হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসক হিসেবে কাজ করা ডাঃ ফারাহ এ ব্যাপারে বিবিসিকে জানান, সারাদিনে একই হিজাব পরিধান করে হাসপাতালে কাজ করায় সেটি পরিস্কার থাকার সুযোগ ছিল না এবং সেটি পরে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করতেও বাধা ছিল। কেননা এতে জীবানু-সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। ফলে তিনি এরকম অপসারনযোগ্য এবং জীবানু-নিরোধক হিজাবের ভাবতে শুরু করেন যা তাকে এই আবিস্কারটি করতে অনুপ্রেরণা যোগায়।
অর্থাৎ তিনি আগে থেকেই হিজাব পরিধান করেই উক্ত হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। পরবর্তীতে তিনি সেই অভিনব হিজাব আবিস্কার করেন। তিনি আরো মনে করেন, এই নতুন আবিস্কৃত হিজাব যুক্তরাজ্যের সবর্ত্র প্রচলন হওয়া জরুরি। তবে বিবিসির সেই খবরে বলা হয়,যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস এটিকে ব্যক্তি-স্বাধীনতার উপর ছেড়ে দিতে আগ্রহী।
কিন্তু ইনকিলাব পত্রিকার খবরে দাবি করা হয়, রয়াল ডার্বি হাসপাতালে হিজাব পরার অনুমতি পেয়েছে মুসলিম নারী চিকিৎসকরা। কিন্তু ইতিমধ্যে দেখানো হয়েছে, অনুমতির কোনো বিষয় উক্ত হাসপাতালে ছিল না এবং সেখানে পূর্বে হিজাব সংক্রান্ত কোনো নিষেধাজ্ঞাও ছিল না।
অর্থাৎ ২০১৯ সালের একটি পুরানো খবর বিকৃত করে প্রকাশ করা হয়েছে উক্ত খবরটিতে।