ফেক নিউজ
ভারতে কুকুর পাচারের খবরটি পুরনো
২০১৯ সালে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খাগড়াছড়ি থেকে ভারতের মিজোরামে কুকুর পাচারের খবরটি প্রকাশিত হয়।
ফেসবুকে 'বাংলাদেশের কুকুর রান্না হচ্ছে ভারতের বিভিন্ন হোটেলে!' শীর্ষক কিছু পোস্ট অনেকে শেয়ার করছেন যেখানে দাবি করা হচ্ছে দেশের সীমান্তবর্তী খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালার বিভিন্ন এলাকা থেকে সনাতনী কায়দায় ফাঁদ পেতে কুকুর শিকার করে তা পাচার হচ্ছে ভারতে। এসব কুকুর ভারতের মিজোরামে বিক্রি করা হয় ও বিভিন্ন হোটেল ব্যবসায়ী এসব কুকুর কিনে তার মাংস রান্না করেন।
অনেকের ফেসবুক পোস্টে সূত্র হিসেবে সময় টিভির নাম উল্লেখ করতে দেখা যায়।
এর প্রেক্ষিতে সময় টিভির ফেসবুক পেজ ঘেটে সেখানে গত ২ মার্চের একটি পোস্ট পাওয়া যায় যেখানে 'বাংলাদেশের কুকুর রান্না হচ্ছে ভারতের বিভিন্ন হোটেলে!' শিরোনামের একটি সংবাদের লিঙ্ক সংযুক্ত করা আছে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে যে এই খবরটি মূলত ২০১৯ সালের নভেম্বরের। সেসময় চট্টগ্রামের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমসহ বিভিন্ন জাতীয় সংবাদমাধ্যমেও খবরটি আসে।
তাছাড়া গত ২ মার্চের সময় টিভির ফেসবুক পোস্টের সাথে যে খবরের লিঙ্কটি সংযুক্ত আছে স্বয়ং সে খবরটিও ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বরের।
দৈনিক আজাদির খবর অনুযায়ী-
''খাগড়াছড়ির সীমান্তবর্তী উপজেলা দীঘিনালার বিভিন্ন হাট থেকে কুকুর ধরে নিয়ে যাচ্ছে মিজোরামের বাসিন্দারা। পাহাড়ের হাট বা পথের এসব কুকুর ধরে নিয়ে মিজোরামের বিক্রি করছে তারা। প্রায় প্রতি মাসেই পাহাড়ের বিভিন্ন হাট থেকে কুকুর ধরছে শিকারীরা। সরু তার দিয়ে কুকুরের মুখ বেঁধে সনাতনী ফাঁদে আটকানো হয় কুকুরগুলো। এছাড়া গলায় আটকে দেওয়া হয় শুকনো বাঁশ। খাওয়ার জন্য এসব কুকুর নিয়ে যাওয়া হয়। মিজোরামের বাজারে প্রতিটি কুকুর বিক্রি হচ্ছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকায়। মিজোরামে কুকুর বিকিকিনি নিষিদ্ধ করেছে সে দেশের আদালত। তারপরও ঠেকানো যাচ্ছে না কুকুর পাচার। কুকুরসহ যেকোন প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন প্রাণীপ্রেমীরা।
জানা যায়, প্রায় প্রতি মাসেই খাগড়াছড়ির দীঘিনালার বোয়ালখালী বাজার, বাবুছড়া, থানা বাজার থেকে কুকুর ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। মিজোরাম থেকে আসা কুকুর শিকারীরা হাটে ঘুরে ঘুরে কুকুর ধরে। অত্যন্ত অমানবিকভাবে এসব কুকুর ধরলেও স্থানীয়রা কোন বাধা দিচ্ছে না। গত বুধবার দীঘিনালা থেকে ৩৫ টি কুকুর ধরে যায় মিজোরামের ৫ কুকুর শিকারী। দীঘিনালার বাবুছড়া বাজার থেকে এসব কুকুর শিকার করা হয় বলে জানা যায়। পরে দীঘিনালা থেকে গাড়ি ভাড়া করে এসব কুকুর রাঙামাটির মাইনী বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। মাইনী থেকে কাপ্তাই হ্রদ হয়ে এসব কুকুর চলে যায় মিজোরামে। গাড়িতে গাদাগাদি করে তোলা হয় ৩৫টি কুকুর। প্রতিটি কুকুরের গলায় ফাঁদ আটকানো।''
দৈনিক কালের কন্ঠও সেবছর ২৪ নভেম্বর খবরটি প্রকাশ করে।
উপরের সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনগুলো পরস্পরের সাথে অনেক ক্ষেত্রে হুবহু মিলে যায়। যেমন প্রতিবেদনে যাদের বক্তব্য নেয়া হয়েছে তাদের সবার বক্তব্য সব প্রতিবেদনেই হুবহু একই রকম।
এক বছরেরও আগে প্রকাশিত একটি খবরকে নতুন করে সংবাদমাধ্যমের ফেসবুকে পেইজে পোস্ট করা পাঠকদের জন্য বিভ্রান্তিকর।
Claim : বাংলাদেশের কুকুর রান্না হচ্ছে ভারতের বিভিন্ন হোটেলে!
Claimed By : Facebook posts
Fact Check : Misleading
Next Story