মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মাওলানা রউফের মৃত্যুর খবরটি পুরোনো
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, আব্দুর রউফের মৃত্যুর খবরটি সাম্প্রতিক নয় বরং গণমাধ্যমে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত হয়েছিল।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে এক ব্যক্তির ছবি শেয়ার করে বলা হচ্ছে, ওই ব্যক্তি নাম মাওলানা আব্দুর রউফ এবং তিনি সম্প্রতি কারাগারে মৃত্যু বরণ করেছেন। এমন কিছু পোস্টের লিংক দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৭ নভেম্বর 'M Jamil Ahmod' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে তথ্যটি শেয়ার করে লেখা হয়, "ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, কাশিমপুর কারাগারে মাওলানা আব্দুর রউফ সাহেব ইন্তেকাল করেছেন।" স্ক্রিনশট দেখুন--
একই ছবি ও ঘটনা নিয়ে করা বিভিন্ন পোস্টের কমেন্ট সেকশনে একাধিক ব্যক্তিকে তথ্যটি সাম্প্রতিক মনে করে মন্তব্য করতে দেখা গেছে। এসব পোস্টে ব্যবহারকারীদের রিয়েকশন পড়েছে দশ হাজারের বেশিবার। দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, তথ্যটি সাম্প্রতিক নয়।
কি-ওয়ার্ড সার্চ করার পর, মূলধারার সংবাদমাধ্যম দৈনিক যুগান্তরের অনলাইন সংস্করণে "কাশিমপুর কারাগারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হুজি সদস্যের মৃত্যু" শিরোনামে একটি খবর খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০২১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়েছে। খবরটিতে লেখা হয়েছে, "গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ মঙ্গলবার বিকালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মাওলানা আব্দুর রউফ ওরফে আব্দুর রাজ্জাক (৬০) নামে এক হুজি (হরকাত উল জিহাদ) সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি মাদারীপুরের রাজৈর থানা মজুমদারকান্দি এলাকার মৃত হাকিম ফরাজীর ছেলে।" স্ক্রিনশট দেখুন--
একই খবর এনটিভি অনলাইন সহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য দেখা গেছে। মূলত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নামের একটি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন সদস্য মাওলানা আব্দুর রউফ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কোটালীপাড়ায় সমাবেশস্থলের পাশে বোমা পুঁতে রাখা সংক্রান্ত মামলায় দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে কাশিমপুর কারাগারের ভেতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেয়ার পর তিনি মারা যান।
অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী রউফের মৃত্যু খবরটি সাম্প্রতিক নয় বরং পুরোনো।
সুতরাং এক বছর পুরোনো মৃত্যু খবরকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে সাম্প্রতিক তথ্য সংযোজন ছাড়াই প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।