মঙ্গল গ্রহে যাচ্ছেন অ্যালিসা কারসন শীর্ষক খবরটি সঠিক নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, মহাকাশ অভিযান সম্পর্কে এই তরুণীর চেষ্টা ও আগ্রহকে তার মঙ্গলে যাওয়ার খবর হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ থেকে ১৭ বছর বয়সী এলিসা কার্সন নামের এক তরুণীর ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে নাসার কনিষ্ঠতম সদস্য এই তরুণী ২০৩৩ সালে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার (NASA) মঙ্গলগ্রহ অভিযানে সামিল হবেন আর কোনদিন মঙ্গলগ্রহ থেকে পৃথিবীর মাটিতে ফিরে নাও আসতে পারেন। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর " Md B Mahmod" নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে করা পোস্টে যা লেখা হয়েছে তা স্ক্রিনশটে দেখুন--
পোস্টে বলা হচ্ছে মঙ্গলগ্রহ থেকে ফিরে আসবে না জেনেও এলিসা নিজেকে তৈরি করছেন মঙ্গলে যাওয়ার জন্য। সব পরিস্থিতি ঠিকঠাক থাকলে তিনিই হবেন প্রথম মঙ্গল গ্রহে পাড়ি দেওয়া মানুষ। যেহেতু মঙ্গল গ্রহে একবার গেলে তিনি আর ফিরে নাও আসতে পারেন তাই নাসার তরফ থেকে একটি চুক্তিপত্রেও তিনি স্বাক্ষর করেছেন যেখানে বলা হয়েছে বিয়ে বা সন্তান ধারণের মতো বিষয় থেকে তাকে বিরত থাকতে হবে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ২০৩৩ সালে অ্যালিসা কারসনের মঙ্গলে যাওয়া সংক্রান্ত খবরটি সত্য নয়।
কী ওয়ার্ড ধরে সার্চ করার পর দেখা যায়, অ্যালিসা নামের এই তরুনীকে নিয়ে বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন ভাষায় আলোচ্য পোস্ট অনুরূপ তথ্য ছড়িয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা স্নোপস তথ্যটি যাচাই করে বিভ্রান্তিকর সাব্যস্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বর্তমানে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থী (২০১৮ সালে তার বয়স ছিলো ১৭ বছর) এলিসা কার্সন কয়েকবার নাসার স্পেস ক্যাম্পে এবং কেনেডি স্পেস সেন্টারের 'পাসপোর্ট টু এক্সপ্লোর স্পেস' প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। স্ক্রিনশট দেখুন--
প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই অ্যালিসার মহাকাশে অভিযান সম্পর্কে আগ্রহ ছিল। এই বিষয়ে Nasa Bluberry নামে তার একটি ওয়েবসাইটের সন্ধানও পাওয়া যায়।
অ্যালিসার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, মাত্র বারো বছর বয়সে তিনি তিনটি স্পেস শাটল উৎক্ষেপণ অনুষ্ঠান এবং তুরস্ক ও কানাডাসহ তিনটি দেশের স্পেস ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেছেন। সেই সাথে তিনি ২০৩০ সালে মঙ্গলে বসতি স্থাপনের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি মিশন 'মার্স ওয়ানে'র সাতজন শুভেচ্ছা দূতের একজন অন্যতম নিযুক্ত হয়েছেন। কিন্তু এগুলো মঙ্গলে অভিযানের জন্য নাসার সাথে তার চুক্তিবদ্ধ হওয়ার কোন ঘটনা নয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
আবার ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা স্নোপসকে নাসার একজন মূখপাত্রও অ্যালিসার সাথে কোনো চুক্তি হওয়া বা তাকে ট্রেইনিং দেয়ার বিষয়টি সঠিক নয় বলে নিশ্চিত করেছেন। দেখুন--
অর্থাৎ নাসার অধীনে অ্যালিসা কারসনের মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার চুক্তি হওয়ার খবরটি সঠিক নয়। তবে এলিসাকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে মহাকাশ নিয়ে উৎসাহী এক তরুণী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
তথ্যটি এর আগে স্নুপস, রয়টার্স ফ্যাক্ট চেক সহ একাধিক যাচাইকারী সংস্থা যাচাই করেছে।
সুতরাং নাসার অধীনে অ্যালিসা কারসনের মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার চুক্তি হওয়ার তথ্য প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা সঠিক নয়।