নেপালকে হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণা করার অসত্য দাবি ফেসবুকে
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ফেসবুকে ব্যবহৃত ছবিটি পুরোনো এবং নেপালকে হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণা করার দাবিটি অসত্য।
নেপালকে হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়েছে এমন দাবি করে বিক্ষোভের কিছু ছবিসহ একাধিক পোস্ট সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এসব পোস্টে বলা হচ্ছে, পৃথিবীর বুকে এটাই একমাত্র হিন্দু ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র। এরকম কিছু পোস্টের আর্কাইভ দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
'হিন্দু ছাত্র মহাজোট নাটোর' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ২১ মে কোলাজ করা বিক্ষোভের দুটি ছবি পোস্ট করে এতে বলা হয়েছে, "আজ নেপাল কে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়েছে ❤ পৃথিবীর বুকে এই প্রথম হিন্দু রাষ্ট্র 😍 ধন্যবাদ জানাই তাদের কে, যাদের পরিশ্রমে নেপাল আজ হিন্দু রাষ্ট্র 🙏🚩" । অর্থাৎ, নেপালকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে সেই পোস্টে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে এই ছবি সম্বলিত পোস্টগুলোতে করা দাবির কোন সত্যতা পায়নি। নেপালকে হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়নি এবং সাংবিধানিকভাবে নেপাল এখনো ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবেই রয়েছে। ২০১৫ সালে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে নেপালকে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হয় যা এখনো বহাল আছে। নেপালের সংবিধানটি দেখুন এখানে।
পুরনো ছবি প্রচার:
রিভার্স সার্চ করে বার্তা সংস্থা এপি'র ছবির গ্যালারিতে বিক্ষোভরত এই নারীর ছবিটি খুঁজে পাওয়া গেছে। সেখানে দেয়া ছবিটির ক্যাপশন বলছে, ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে নেপালকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করার দাবিতে এক নেপালি নারীর বিক্ষোভরত অবস্থায় ছবিটি ধারণ করা। যদিও একই বছর নেপালের সংবিধানে দেশটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলে ঘোষনা করা হয়।
এছাড়া, রিভার্স সার্চে দেখা গেছে মাস্ক পরা বিক্ষোভের ছবিটিও পুরনো। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে একাধিক নেপালি সংবাদমাধ্যমে ছবিটি প্রকাশিত হয়। 'নেপাল সময়' নামের স্থানীয় ও্ই পত্রিকার সংশ্লিষ্ট ছবি যুক্ত খবরটির স্বয়ংক্রিয় অনুবাদ থেকে জানা যায়, সেসময় নেপালকে হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণা এবং হিন্দু রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছিল এবং ছবিটি সেই ঘটনার।
অর্থাৎ, ছবি দুটি ভিন্ন দেশের এমনকি ভিন্ন সময়ে তোলা এবং দুটি ছবিই সাম্প্রতিক সময়ের নয়।
সুতরাং, নেপালকে হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষনা করা হয়েছে বর্ণনা করে পুরনো ছবি সহ ফেসবুকে যে দাবি প্রচারিত হচ্ছে তা অসত্য।