বাংলাদেশি মুসলিম গৃহবধুর ছবি ব্যবহার করে ভারতে সাম্প্রদায়িক ভুয়া প্রচারণা
জুন মাসে সুমাইয়া হাসান তার স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের ছবি প্রকাশ করেন, সেই ছবিকে ব্যবহার করা হচ্ছে ভুয়া তথ্য যুক্ত করে।
ভারতের বিভিন্ন ফেসবুক পেইজ ও আইডি থেকে এক নারীর ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ওই নারী নাকি একজন হিন্দু এবং 'লাভ জিহাদের' ফাদে পড়ে তিনি মুসলিম হয়েছেন। এবং বর্তমানে তার মুসলিম স্বামী তাকে নির্যাতন করছে।
কয়েকটি ছবির সাথে ভাইরাল হওয়া পোস্টের টেক্সট এরকম--
"এই হিন্দু মেয়েটিকে সবাই বুঝিয়েছিল,
যে তুই এই মুসলমান ছেলেকে বিয়ে করিস না। কিন্তু মেয়েটির সেই চিরাচরিত একই কথা -না আমার আয়ান খান এমন নয়,সে অন্যদের চেয়ে আলাদা।
আর এখন সে সবাইকে বলছে, যে এই হায়েনা থেকে আমাকে তোমরা বাঁচাও।
দয়া করে সবাই নিজের পরিবার এবং পাড়া প্রতিবেশী সবাইকে লাভ জিহাদের কালো থাবা থেকে বাঁচান এবং সতর্ক করুন।"
স্ক্রিনশটে পোস্ট দেখুন--
এরকম কয়েকটি পোস্টের লিংক দেয়া হলো এখানে, এখানে ও এখানে। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পোস্ট ও ছবিটি বাংলা ও হিন্দি ভাষায় ভাইরাল হলেও তাতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই যে, ঘটনাটি কোথাকার।
বুম বাংলাদেশ- এর অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, ভাইরাল হওয়া ছবিগুলো বাংলাদেশি এক মুসলিম গৃহবধুর।
চলতি বছরের জুন মাসে Sumaiya Hassan হাসান নামের ওই গৃহবধু নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে নিজের আহত অবস্থার কয়েকটি ছবিসহ একটি পোস্ট দেন। যেখানে তিনি অভিযোগ করেন, স্বামী জাহিদ হাসান অন্তর ও তার পরিবার যৌতুক না দেয়ায় তার ওপর এমন বর্বর অত্যাচার করেছেন।
সেই পোস্টের ভিত্তিতে তখন ঢাকা ট্রিবিউন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
পরে সুমাইয়া হাসান তার সেই পোস্ট সরিয়ে ফেলেন। সুমাইয়ার পোস্টটি তখন বাংলাদেশে অনকে ফেসবুক পেইজে পুঃপ্রকাশিত হয়। সেরকম একটি পোস্টের আংশিক স্ক্রিনশট দেখুন --
প্রথম পোস্ট সরিয়ে একইদিন সুমাইয়া হাসান আরেকটি পোস্ট দেন। তাতে তিনি জানান, পুলিশের সহায়তায় স্বামীর সাথে তার মিটমাট হয়ে গেছে এবং সে কারণে আগের পোস্ট সরিয়ে নিয়েছেন।
ভারতে ভাইরাল হওয়া পোস্টে সুমাইয়া হাসানের ছবি ব্যবহার করে তাকে হিন্দু থেকে মুসলিম হওয়া নারী বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু সুমাইয়া তেমন তার এমন কোনো পরিচয় দেননি। অন্যদিকে ভারতীয় পোস্টগুলোতে সুমাইয়ার স্বামীর নাম বলা হয়েছে "আয়ান খান"। কিন্তু বাস্তবে তার স্বামীর নাম জাহিদ হাসান অন্তর।