ময়মনসিংহ কলেজের সামনের মূর্তিটি বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ স্থাপন করেনি
গ্রিক দেবী ভেনাসের মূর্তিটি স্থাপন করেছিলেন ১৮৯৭ সালে স্থাপিত ভবনের মালিক এক জমিদার
ফেসবুকে একাধিক পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, ময়মনসিংহ মহিলা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সামনে নগ্ন মূর্তি স্থাপন করেছে কর্তৃপক্ষ। দেখুন এমন কিছু ফেসবুক পোস্ট এখানে, এখানে এবং এখানে।
Md Mizanur Rahman খান নামের আইডি থেকে "মহিলা কলেজের সামনে কেন এই অশ্লীল ভাস্কর্য?ময়মনসিংহ মহিলা কলেজর সামনে নগ্ন মূর্তি স্থাপন" শিরোনামে একটি পোস্ট করা হয়। দেখুন পোস্টের স্ক্রিনশট--
অর্থাৎ এই পোস্ট পড়ে ধারণা হচ্ছে যে, "ময়মনসিংহ মহিলা টিচার্স ট্রেনিং কলেজর সামনে নগ্ন মূর্তিটি স্থাপন করা হয়েছে"।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই মূর্তি বাংলাদেশ সরকার কিংবা কোনো কর্তৃপক্ষের 'স্থাপন' করা নয়। বাংলাদেশ জাতীয় সরকারি তথ্য বাতায়ন মারফত জানা যায়, "ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝিতে নয় একর জায়গায় একটি দ্বিতল ভবন তৈরি করেন মুক্তাগাছার জমিদার সূর্যকান্ত। তাঁর দত্তক পুত্র শশীকান্ত আচার্য চৌধুরীর নামে ভবনের নাম রাখা হয় শশী লজ। ১৮৯৭ সালের ১২ জুন ভূমিকম্পে ভবনটি বিধ্বস্ত হয়। ১৯০৫ সালে একই জায়গায় পরবর্তী জমিদার শশীকান্ত আবার ভবন তৈরি করেন।"
এই জমিদার ভবনে আরও অনেক কিছুর সাথে "গ্রিক দেবী ভেনাসের স্বল্পবসনা স্নানরত মর্মর মূর্তি"ও স্থাপন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৫২ সালে এটিকে মহিলা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ হিসেবে ব্যবহার করা শুরু হয়। বাড়িটির মূল অংশ মহিলা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয় ও দপ্তর হিসেবে নির্ধারিত ছিল। এ ছাড়া ২০১৫ সালে সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর জাদুঘর স্থাপনের জন্য 'শশী লজ'কে নিজেদের আওতাধীন করে ফেলে।
অর্থাৎ, ময়মনসিংহ মহিলা টিচার্স ট্রেনিং কলেজর সামনে নগ্ন মূর্তিটি বাংলাদেশ সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষ স্থাপন করেনি। বরং মূর্তিসহ শতবর্ষ আগে তৈরি করা হিন্দু ব্যক্তির (তৎকালীন স্থানীয় মহারাজা) মালিকানাধীন ভবনে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ চালু করা হয়েছিলো।