শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য খালেদা জিয়াকে মনোনয়নের দাবিটি সঠিক নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম এবং মনোনয়ন সংক্রান্ত তথ্য ৫০ বছর পর্যন্ত প্রকাশ করে না নোবেল কমিটি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি এবং পেজ থেকে পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাম শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন তালিকায় স্থান পেয়েছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর 'Jasim Uddin' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে খালেদা জিয়ার একটি ছবি পোস্ট করে তার ক্যাপশনে বলা হয়, "আলহামদুলিল্লাহ্!! শান্তিতে নোবেল বিজয়ী তালিকায় বেগম খালেদা জিয়া'র নাম মনোনয়ন প্রস্তাব গ্রহণ!"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়নপ্রাপ্তদের নামের তালিকা এবং মনোনয়ন সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য পরবর্তী ৫০ বছর পর্যন্ত জানা যায় না অর্থাৎ সেসব তথ্য ৫০ বছর গোপন রাখে নোবেল কমিটি। আর নোবেল পুরস্কার কারা পাবেন এ তথ্য জানতে পুরস্কার ঘোষণার দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
সার্চ করে নোবেল প্রাইজ অর্গানাইজেশনের ওয়েবসাইটে নোবেল পুরস্কার-২০২৩ এ কাদেরকে মনোনয়ন করা হয়েছে তার তালিকা পাওয়া যায়নি। তবে, Nomination and selection of Nobel Peace Prize laureates শিরোনামে ওয়েবসাইটে পুরস্কারের ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া আছে। এতে বলা হয়, "নোবেল শান্তি পুরস্কার মনোনয়ন যে কোনো ব্যক্তি মনোনয়নের মানদণ্ড পূরণ করে জমা দিতে পারেন। জমা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণের চিঠির প্রয়োজন নেই। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম এবং মনোনয়ন সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য ৫০ বছরের পর পর্যন্ত প্রকাশ করা হয় না।"। স্ক্রিনশট দেখুন--
সার্চ করে প্রথম আলোর "নোবেল পুরস্কার নিয়ে কিছু কথা জেনে নিন" শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে "বিজয়ীদের নাম কারা জানেন" শীর্ষক একটি প্যারাগ্রাফে বলা হয়, "নিয়ম অনুযায়ী বিচারকেরা ৫০ বছর ধরে এ বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন না। তাই ২০২২ সালে বিচারকেরা কীভাবে বিজয়ীদের মনোনীত করেছেন এবং কারা তাঁদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন, তা নিশ্চিতভাবে জানতে হলে নাম ঘোষণার দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বিচারকেরা চূড়ান্ত ঘোষণার আগে বিজয়ীদের সম্পর্কে ইঙ্গিত দেওয়া এড়াতে চেষ্টা করেন।" দেখুন--
অর্থাৎ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেয়া কিংবা তাঁর নাম মনোনয়নের প্রস্তাব গ্রহণ সংক্রান্ত দাবিটি সঠিক নয়। যদি তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে থাকেন বা আবেদন করে থাকেন, তা জানার কোনো সুযোগ নেই, অর্থাৎ দাবিটি ভিত্তিহীন।
সুতরাং শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য খালেদা জিয়ার মনোনয়ন প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে বলে যে দাবি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে, তা বিভ্রান্তিকর।