যমুনা টিভির পুরোনো খবর সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, যমুনা টিভির এই প্রতিবেদনটি ২০২৩ সালের; সম্প্রতি খাজা টাওয়ারে কোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে সম্প্রচার মাধ্যম যমুনা টেলিভিশনের একটি ভিডিও প্রতিবেদন পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, এটি সম্প্রতি মহাখালীর খাজা টাওয়ারের আগুনের ঘটনার। বিএনপি-জামায়াতের এই অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ডাটা সেন্টার ও সঞ্চালন লাইন পুরো নষ্ট হয়ে গেছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২০ জুলাই 'Shohid Miah' নামের একটি আইডি থেকে পোস্ট করে বলা হয়, "যারা বলেন নেটওয়ার্ক সরকার বন্ধ করে রেখেছে তাদের জন্য বিএনপি-জামায়াতের বর্বরোচিত হামলায় মহাখালীর বিটিআরসি ভবনের ডাটা সেন্টার ও সঞ্চালন লাইন পুরো নষ্ট হয়ে গেছে, ডাটা সেন্টার পুনঃসংযোগের কাজ চলছে, পুরোপুরি মেরামত না হওয়া পর্যন্ত দেশে ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যাবে না।" নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ দেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে হতাহত ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত জড়িত বলে অভিযোগ করে আসছে সরকার। উক্ত খবরটি এই সময়ে মহাখালীতে অবস্থিত খাজা টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার বলে দাবি করা হচ্ছে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলেও মহাখালীতে অবস্থিত খাজা টাওয়ারে আগুনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে ভাইরাল যমুনা টিভির প্রতিবেদনটি ২০২৩ সালের; সাম্প্রতিক নয়।
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে "পুড়ে গেছে ডেটা সার্ভার; কবে স্বাভাবিক হবে ইন্টারনেট সেবা?" শিরোনামে গত ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর প্রকাশিত 'Jamuna TV' ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেই প্রতিবেদনে প্রকাশিত ভিডিওটির সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ২৬ অক্টোবর মহাখালীর খাজা টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভবনে থাকা ডেটা সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হয়।
নিচে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচারিত প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট (বামে) এবং যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত পুরোনো খবরের ভিডিওর স্ক্রিনশট (ডানে) দুটির মধ্যে মিল দেখুন পাশাপাশি--
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে একই সময়ে অর্থাৎ গত বছরের অক্টোবরে খাজা টাওয়ারে আগুন লাগার ঘটনায় একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হতে দেখা যায়। "রাজধানীর খাজা টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত" শিরোনামে ডেইলি স্টারের অনলাইনে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর মহাখালীর খাজা টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ সেবা ব্যাহত হচ্ছে। কারণ ভবনটিতে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) সার্ভিস প্রোভাইডার, ডাটা সেন্টার এবং ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জের (আইসিএক্স) অপারেশন সেন্টার আছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
এদিকে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাম্পতিক অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মহাখালীর তিন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেলেও খাজা টাওয়ারে অগ্নিসংযোগের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ মহাখালীতে অবস্থিত খাজা টাওয়ারে অগ্নিসংযোগের কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে ভাইরাল যমুনা টিভির প্রতিবেদনটি গত ২০২৩ সালের; সাম্প্রতিক নয়।
সুতরাং যমুনা টিভির ২০২৩ সালের ভিডিও প্রতিবেদন পোস্ট করে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।