এগুলো পাকিস্তানের মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ছবি নয়
ভারতের ভিন্ন ঘটনার দুটি ছবি দিয়ে পাকিস্তানে মসজিদে বিস্ফোরণে অনেক মুসুল্লি মারা যাওয়ার খবর প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে।
ফেসবুকে দুটি ছবিসহ একটি পোস্ট ছড়িয়েছে যেখানে দাবি করা হচ্ছে, পাকিস্তানে একটি মসজিদ বিস্ফোরণে অনেক মুসুল্লী মারা গেছে। উক্ত পোস্টটিতে প্রায় ২ হাজার লাইক এবং প্রায় ৫ শতাধিক কমেন্ট পড়েছে। এছাড়া উক্ত পোস্টটি শেয়ার হয়েছে ৩৪টি। দেখুন এখানে।
Salat-صلاة-নামাজ নামের গ্রুপ থেকে গতকাল একটি পোস্ট করা হয় যার ক্যাপশনে লেখা ছিল--
--ব্রেকিং নিউজ, পাকিস্তানে একটি মসজিদ বিষ্ফোরণে অনেক মুসল্লি প্রাণ হারিয়েছে। অাল্লাহ পাক মুসলিম শহীদ ভাইদেরকে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করুক।অামিন।
পোস্টটির সাথে দুটি ছবিও যুক্ত করা হয়েছে।
দেখুন স্ক্রিনশট-
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পাকিস্তানে মসজিদে বিস্ফোরণের দাবিটি ভিত্তিহীন।
প্রথমত উক্ত পোস্টটিতে দাবি করা হয়েছে যে পাকিস্তানে একটি মসজিদে বিস্ফোরণে অনেক মুসুল্লি নিহত হয়েছেন। কিন্তু পাকিস্তানে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটা এমন কোনো বিস্ফোরণের খবর আন্তর্জাতিক কোনো সংবাদমাধ্যমে পাওয়া যায় না।
দ্বিতীয়ত, পোস্টটিতে দুটি ছবি যুক্ত করা হয়েছে যা মূলত ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরানো দুটি ছবি। পোস্টটির প্রথম ছবিতে একটি মসজিদে আগুন দেখা যাচ্ছে। কিন্তু গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা গেছে, ছবিটি পাকিস্তানেরই নয়। Kashmirilife.net নামক একটি সাইটে উক্ত ছবির ব্যাপারে একটি বর্ণনা পাওয়া যায় যেখানে বলা হচ্ছে, ছবিটি কাশ্মিরে।
২০১৭ সালে প্রকাশিত সেই লেখায় বলা হয়, ২০১২ সালে দস্তগির সাহিব মাজারে এই আগুন লাগার ঘটনাটি ঘটে। দেখুন এ সংক্রান্ত এপি'র একটি ভিডিও--
অন্যদিকে পোস্টটির দ্বিতীয় ছবিটিতে কিছু লোককে কাফন-পরিহিত অবস্থায় দেখা যাচ্ছে যা মূলত গত বছরের(২০২০) ভারতের একটি ছবি। ভারতের স্থানীয় পত্রিকা জেজেপিনিউজ ডটকমের বরাতে জানা যায় উক্ত ছবিটি আওরাংবাদে ভারতে সিএএ-এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের। একই আন্দোলনের আরেকটি ভিডিও দেখুন নিচে--
একই আন্দোলনের ছবি ব্যবহার করে আগেও ভুয়া খবর ছড়ানো হয়েছে। দেখুন, 'ভারতে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদের ছবিকে নিহতদের ছবি বলে প্রচার' শিরোনামের আরেকটি রিপোর্ট।
অর্থাৎ ভিন্ন প্রেক্ষাপটের দুটি ছবিকে যুক্ত করে পাকিস্তানে মসজিদে বিস্ফোরণের ভিত্তিহীন খবর প্রচার করা হচ্ছে।