বাংলাদেশের পণ্য বয়কট করেনি ভারত
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ভারত বাংলাদেশের পণ্য বয়কট করেছে বলে সামাজিক মাধ্যমে যে দাবি করা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের সব ধরণের পণ্য বয়কট করেছে ভারত। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে।
গত ২৭ নভেম্বর 'ভালোবাসার ক্যানপাস' নামের একটি পেজ থেকে পোস্ট করে লেখা হয়, "বাংলাদেশের সকল পণ্য বয়কট করলো ভারত,,,একমাত্র মনসুদার জন্যে।" নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। ভারত বাংলাদেশের পণ্য বয়কট করা সংক্রান্ত কোনো ধরণের তথ্য বা প্রতিবেদন দুই দেশের কোনো গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইট, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইট ও ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের ওয়েবসাইটেও এ ধরণের কোনো তথ্য, প্রেস রিলিজ বা বিবৃতি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বাংলাদেশ এবং ভারতের গণমাধ্যমগুলোতে সম্প্রতি বাংলাদেশের কোনো পণ্য বয়কট করার বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি। খুব স্বাভাবিকভাবেই ভারত বাংলাদেশের পণ্য বয়কটের ঘোষণা দিলে উভয় দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে খবরটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রকাশিত হওয়ার কথা। এমনকি ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য বিভাগের ওয়েবসাইটে এ ধরণের কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি ওয়েবসাইটের মিডিয়া সেন্টার-এ সর্বশেষ তথ্যটি আপডেট করা হয়েছে গত ১৭ নভেম্বর। স্ক্রিনশট দেখুন--
আরো সার্চ করে ইন্ডিয়ার পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়েও বাংলাদেশের পণ্য নিষেধাজ্ঞা বা বয়কটের ব্যাপারে কোনো ধরণের নোটিশ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্ক্রিনশট দেখুন--
এদিকে, বিষয়টি আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য কি ওয়ার্ড সার্চ করে ইন্ডিয়ান হাইকমিশন, ঢাকা ওয়েবসাইটে গিয়েও বাংলাদেশীদের জন্য ভিসা বন্ধ করে দেওযার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ভারত বাংলাদেশি পণ্য বয়কট করেছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ নভেম্বর ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে স্বাগতিক দেশকে হারিয়ে ষষ্ঠবারের মতো কাপ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। এই ম্যাচে বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তদের বড় একটি অংশ ভারতের বিপক্ষ দলকে সমর্থন করলে সেটি গণমাধ্যমেও খবর হয়। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায় ভারতের বিভিন্ন পেশার মানুষ। এক পর্যায়ে অনেকেই বাংলাদেশের পণ্য বয়কটের দাবি জানান। যদিও এমন কোনো সিদ্ধান্ত ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আসেনি।
সুতরাং ভারত বাংলাদেশি পণ্য বয়কট করেছে বলে যে দাবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, তা বিভ্রান্তিকর।