পাকিস্তানের বিচারপতি নাসিরা জাভেদ ইকবালের নামে ভুয়া বক্তব্য প্রচার
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, সাবেক এই বিচারপতি পাকিস্তানের জিও টিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বক্তব্যটি তাঁর নয় বলে নিশ্চিত করেছেন।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একটি লেখা শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, পাকিস্তানের প্রখ্যাত লেখক আল্লামা ইকবালের পুত্রবধূ ও পাকিস্তান হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি নাসিরা জাভেদ ইকবাল দেশটির সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পতনের পিছনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে ইসলামাবাদ টাইমসে এই লেখাটি লিখেছেন। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৭ এপ্রিল 'প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ' নামের ফেসবুক আইডি থেকে করা পোস্টে লেখা হয়,
"ইমরান খানের অপসারণের পেছনে রয়েছে ডলার কূটনীতি
===================================
আল্লামা ইকবালের পুত্রবধূ ও পাকিস্তান হাইকোর্টের সাবেক সাবেক জাজ নাসিরা জাভেদ ইকবাল ইমরানের পতনের পিছনে আমেরিকান ভূমিকা নিয়ে ইসলামাবাদ টাইমসে একটি চমৎকার কলাম লিখেছেন। নিচে তার সারমর্ম তুলে দিলাম। মূল পোস্ট কমেন্টে:
আমেরিকার কাছে ইমরান খানের অপরাধ কী তা বুঝতে গেলে দুটি জিনিস জানতে হবে
১) পেট্রোডলার কি? এটা হচ্ছে মূলত বাদশা ফয়সাল ও প্রেসিডেন্ট নিক্সনের মধ্যে অনুষ্ঠিত 1974 সালে করা একটি চুক্তি।
.সৌদির দায়িত্ব ছিল ওপেকভুক্ত অন্য অন্য দেশকে রাজি করানো যাতে তারা ডলার ছাড়া অন্য কোন মুদ্রা বা স্বর্ণের বিনিময়ে যেন তেল বিক্রি না করে। এর ফলে পেট্রোডলারের জন্ম হয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে ডলার অনেক শক্তিশালী অবস্থানে চলে যায়............."। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, লেখাটি পাকিস্তানের সাবেক বিচারপতি নাসিরা জাভেদ ইকবালের বলে করা দাবিটি বিভ্রান্তিকর। কারণ পাকিস্তানের সম্প্রচার মাধ্যম জিও টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক এই বিচারপতি নিজেই এই লেখাটি তাঁর নয় বলে নিশ্চিত করেছেন।
সার্চ করার পর ভাইরাল পোস্টে উল্লেখিত 'ইসলামাবাদ টাইমস' নামে কোনো সংবাদমাধ্যম খুঁজে পাওয়া যায়নি বরং এই নামে একটি ফেসবুক পেজ খুঁজে পাওয়া গেছে। তবে সেই পেজেও এই প্রতিবেদন লেখার সময় লেখাটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ লেখাটি পেজে পোস্ট করা হলেও তা সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
কি-ওয়ার্ড ধরে সার্চ করার পর, "A fake post circulating on social media associated with Justice (r) Nasira Javed..!!" শিরোনামে পাকিস্তানের সম্প্রচার মাধ্যম জিও টিভি'র ওয়েবসাইটে একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। জিও টিভিকে নাসিরা জাভেদ ইকবাল জানান, এমন কোনো বক্তব্য তিনি দেননি। পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমে তাঁর কোন একাউন্ট নেই বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি। স্ক্রিনশট দেখুন--
নাসিরা জাভেদ ইকবালের সাক্ষাৎকারটি দেখুন--
অর্থাৎ লেখাটি পাকিস্তানের সাবেক বিচারপতি নাসিরা জাভেদ ইকবালের বলে করা দাবিটি বিভ্রান্তিকর। তবে বুম বাংলাদেশ ভাইরাল পোস্টটির বিষয়বস্তু আলাদাভাবে যাচাই করে দেখেনি।
সুতরাং পাকিস্তানের সাবেক বিচারপতি নাসিরা জাভেদ ইকবালের নামে ভুয়া বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।