টিসিবির ৪৩ লাখ কার্ড বাতিলের ভুয়া খবর প্রচার
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ৪৩ লাখ কার্ড বাতিল হওয়ার খবরটি সঠিক নয় বলে টিসিবির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থ্রেডসে পোস্ট করে বলা হচ্ছে; বাতিল করা হয়েছে টিসিবির ৪৩ লাখ কার্ড। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ৯ নভেম্বর ‘mdkhaledmusa’ নামক ইউজার নেম এর একটি থ্রেডস অ্যাকাউন্ট থেকে তথ্যটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, “বাতিল করা হয়েছে টিসিবির ৪৩ লক্ষ কার্ড! আহ্ এই ৪৩ লক্ষ পরিবার কোথায় যাবে? এটাই কি নতুন স্বাধীনতার ফসল”। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। টিসিবির ৪৩ লাখ কার্ড বাতিল করা হয়নি বরং তা স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মুখপাত্র হুমায়ুন কবির এ বিষয়ে বলেছেন, ৪৩ লাখ কার্ড বাতিলের বিষয়টি সঠিক নয়।
বিষয়টি নিয়ে কি-ওয়ার্ড সার্চ এর মাধ্যমে সংবাদপত্র ‘দৈনিক প্রথম আলো’ এর অনলাইন সংস্করণে গত ৯ নভেম্বর ২০২৪ "৪৩ লাখ কার্ড বাতিল হয়নি, ব্যাখ্যা দিলেন টিসিবির মুখপাত্র” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এতে উল্লেখ করা হয়, সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মুখপাত্র হুমায়ুন কবির ৪৩ লাখ পরিবার বা ফ্যামিলি কার্ড বাতিল করা সংক্রান্ত বক্তব্যের একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কার্ড বাতিলের বিষয়টি সঠিক নয়। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
পাশাপাশি, কি-ওয়ার্ড সার্চ এর মাধ্যমে সংবাদপত্র ‘বণিক বার্তা’ এর অনলাইন সংস্করণে “৪৩ লাখ ফ্যামিলি কার্ড বাতিলের খবর, টিসিবি বলছে সঠিক নয়” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এতে টিসিবি'র মুখপাত্র হুমায়ুন কবিরের বরাতে উল্লেখ করা হয়, হাতে লেখা এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যে ৫৭ লাখ স্মার্ট কার্ডে রূপান্তর করা হয়েছে। বাকি ৪৩ লাখ কার্ড স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এখন তথ্য হালনাগাদ ও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এর মধ্যে যদি কোনো কার্ডে অনিয়ম ধরা পড়ে, তাহলে সেই কার্ড বাতিল করা হবে। এখন এক কোটি কার্ডধারী সবাইকে পণ্য দেয়া হচ্ছে। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ টিসিবির ৪৩ লাখ কার্ড বাতিল করা হয়নি তবে হাতে লেখা কার্ডের প্রচলন বাতিল হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দৈনিক কালের কণ্ঠের 'টিসিবির ৪৩ লাখ কার্ড যাচাই ১ জানুয়ারি থেকে স্মার্ট কার্ডে' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাতে উল্লেখ করা হয়, এক কোটি হাতে লেখা কার্ড যখন এনআইডির সঙ্গে ইন্টিগ্রেশন করা হয়েছে; তখন দেখা গেছে, একই এনআইডি দিয়ে ঢাকায় একবার কার্ড নিয়েছে, আবার নিজের গ্রামের বাড়িতে হয়তো আরেকটা কার্ড করেছে। যখন এনআইডি দিয়ে যাচাই করা হয়েছে, তখন ৪৩ লাখ কার্ডে গরমিল দেখা গেছে। সব ঠিক থাকলে এই ৪৩ লাখ কার্ড যাচাই-বাছাই করে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তর করে আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে পুরোপুরি স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করবে টিসিবি।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে 'টিসিবির ৪৩ লাখ কার্ড বাতিল করা হয়েছে' মর্মে যে তথ্য প্রচার করা হয়েছে; তা বিভ্রান্তিকর।