এই 'স্বাস্থ্য উপদেশ' বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নয়
বুম বাংলাদেশের অনুসন্ধানে দেখা গেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে এমন কোন তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে 'মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর সাতটি অভ্যাস' শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক মাধ্যমসহ অনলাইন পোর্টালে কিছুদিন পর পরই শেয়ার হচ্ছে।
পোস্টে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে 'মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর সাতটি অভ্যাস' শিরোনাম দিয়ে সাতটি অভ্যাসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যা করতে থাকলে ব্রেইনের ক্ষতি হবে বলে দাবি করা হয়েছে। সাতটি অভ্যাসের মধ্যে আছে সকালের নাস্তা পরিহার করা, রাতে দেরী করে ঘুমানো, অতিরিক্ত চিনি খাওয়া, সকালে বেশী ঘুমানো, টিভি/কম্পিউটার ব্যবহারের সময় খাওয়া, রাতে ঘুমানোর সময় মাথায় স্কার্ফ বা পায়ে মোজা দেয়া এবং প্রশ্রাব আটকে রাখার কথা।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ তথ্যটির উৎস ও সত্যতা নিয়ে অনুসন্ধান চালায়। দেখা যায় গত ২৭ মে ইংরেজী দৈনিক 'ডেইলী সান' এর অনলাইন ডেস্ক ''7 biggest brain damaging habits must stop'' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন করে। প্রতিবেদনটিতে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিটিকে সংযুক্ত করে মস্তিষ্ককে কর্মক্ষম রাখতে উপরে উল্লেখিত সাতটি অভ্যাস পরিহার করতে বলা হয় যেখানে সূত্র হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কথা বলা হয়ছে।
বুম বাংলাদেশ ইংরেজী এই শিরোনামে গুগল অ্যাডভান্স সার্চ চালিয়ে FITWELL নামে একটি লাইফস্টাইল ব্লগে একই শিরোনামে ২০১৭ সালের ১৩ জুলাইয়ের একটি পোস্ট পায় যেখানে অবশ্য সাতটি অভ্যাসের মধ্যে কিছুটা ভিন্নতা আছে।
একই শিরোনামে The Alternative Daily নামে অপর একটি ওয়েবসাইটেও এরকম একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায় এবং সেখানেও পরিহার্য কাজগুলোর সাথে ভাইরাল হওয়া তথ্যের হুবহু মিল নেই।
২০১৬ সালের জুলাই মাসে হুবহু একইরকম স্বাস্থ্য উপদেশ যুক্ত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। কিন্তু উপদেশগুলো যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দিয়েছে তা দাবি করা হয়নি ওই প্রতিবেদনে।
এছাড়া গত বছর একই উপদেশ বিভিন্ন দেশের সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে ভিন্ন আরেকটি সংস্থার নামে।
চলতি জুলাই মাসে বার্তাটি নাইজেরিয়া ভাইরাল হওয়ার পর সেখানকার একটি সংবাদমাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নাইজেরিয়া অফিসের সাথে যোগাযোগ করে এটির সত্যতা জানার জন্য। তারা জানিয়েছে, এ ধরনের বক্তব্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে দেয়া হয়নি।
অর্থাৎ, এই স্বাস্থ্য উপদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দিয়েছে এটা সত্য নয়।