বটগাছ শিশুর হাত টেনে নেওয়ার দাবিটি ভিত্তিহীন
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, চাক থেকে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে হাত আটকে যায় শিশুটির, পরে তাকে উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ, আইডি এবং গ্রুপ থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, একটি বটগাছ এক শিশুর হাতকে ভেতরে টেনে নিচ্ছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৬ জুলাই ‘সামাজিক’ নামে একটি পেজ থেকে এই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। ওই পোস্টে লেখা থাকতে দেখা যায়, "কি সর্বনাশ? বটগাছটি ছেলেটির হাত কে ভিতরের দিকে টেনে নিচ্ছে।” ফেসবুকে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন---
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওটির ক্যাপশনে করা দাবিটি ভিত্তিহীন। গণমাধ্যম ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহে বিশাল আকৃতির একটি বট গাছের কুঠুরির মধ্যে মৌমাছির চাক থেকে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে শিশুটির হাত আটকে যায়। পরে মিনহাজ রহমান (১০) নামের ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। শিশুটির বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার দুল্লা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের পশ্চিম চণ্ডীমণ্ডপ গ্রামে।
কি-ওয়ার্ড সার্চ করার পর, গত ৬ জুলাই দৈনিক যুগান্তরে ‘গাছের ভেতরে আটকে যায় শিশুর হাত, অতঃপর...’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।এতে বলা হয়, মিনহাজ রহমান সকালে পশ্চিম চণ্ডীমণ্ডপ এলাকার একটি বটগাছের সুড়ঙ্গের ভিতরে অবস্থান করা মৌমাছির চাক থেকে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে ভিতরে হাত ঢুকিয়ে দেয়। এ সময় তার একটি হাত আটকা পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে। স্ক্রিনশট দেখুন--
ভিডিওটির ক্যাপশনে "বটগাছটি ছেলেটির হাত কে ভিতরের দিকে টেনে নিচ্ছে" বলে যে ভৌতিক দাবি করা হচ্ছে, এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে তা সত্য নয় বলে বুম বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন, মুক্তগাছা উপজেলার ফ্যায়ার সার্ভিসের সদস্য জুলহাস উদ্দিন। তিনি বলেন, "গত ৬ জুলাই সকাল ১০টার দিকে আমাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে আসি। সেখানে ওই শিশুটি বট গাছের কুঠুরি থেকে একটি মৌমাছি বের হলে সেখান থেকে মধু সংগ্রহ করতে তার মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দেয়। পরে তার হাতটি আটকা পড়ে যায়। আমরা গাছ কেটে শিশুটিকে উদ্ধার করি"।
অর্থাৎ ভিডিওটির ক্যাপশনে করা দাবিটি ভিত্তিহীন।
সুতারাং বটগাছের কুঠুরিতে শিশুর হাত আটকে যাওয়ার ঘটনার একটি ভিডিওকে চটকদার শিরোনাম দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।