না, এটি সাগরের নিচ থেকে তোলা অক্ষত কুরআন নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, এটি মূলত স্ফটিক (Crystallized) জার্মান-ইংলিশ অভিধান বই।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি সমুদ্রের তলদেশ থেকে তোলা অক্ষত কুরআন শরীফের। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১ অক্টোবর 'Ayesha Siddika' নামের একটি আইডি থেকে করা কুরআনের একটি আয়াতের তর্জমা সহ একটি ছবি পোস্ট করা হয়। গ্রাফিক ছবিটিতে লেখা আছে, "সমুদ্রের তলদেশ থেকে তোলা অক্ষত অবস্থার কুরআন শরীফ"। স্ক্রিনশটে দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ছবির সাথে করা দাবিটি বিভ্রান্তিকর। মূলত এটি রাসায়নিক পদ্ধতিতে স্ফটিক (Crystallized) করা একটি জার্মান-ইংলিশ অভিধান বই।
রিভার্স ইমেজ সার্চের করলে দেখা যায়, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে ছবিটি বাইবেলের দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হলে একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা দাবিটি যাচাই করে ভিত্তিহীন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তন্মধ্যে ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা (স্নোপস্) (snopes) " Was This Bible Found at the Bottom of the Ocean?" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ভাইরাল ছবিটিকে বাইবেল হিসেবে করা দাবিটি ভিত্তিহীন হিসেবে চিহ্নিত করে। স্ক্রিনশট দেখুন--
এই সূত্রধরে সার্চ করে, 'Stuff You Can't Have' নামের ব্লগ ওয়েবসাইটে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০১৪ সালের ১৮ মে প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত ব্লগে "Crystallization Experiments 1: Books and Paper Ephemera" শিরোনামে প্রকাশিত ব্লগ প্রতিবেদনটিতে মূলত Catherine McEver নামে একজন গবেষক তাঁর গবেষণা অভিজ্ঞতা তুলে ধরে, আলোচ্য ছবিটিকে স্ফটিক (Crystallized) জার্মান-ইংলিশ অভিধান বইয়ের বলে উল্লেখ করেন। এক্ষেত্রে গবেষক তাঁর গবেষণার ফর্মুলা হিসাবে পানি এবং সোডিয়াম বোরেট বা বোরাক্স প্রয়োগের কথা উল্লেখ করেছেন।
ব্লগটিতে তিনি তাঁর গবেষনায় স্ফটিক করা জার্মান-ইংলিশ অভিধান বইটির আরও কিছু ছবি যুক্ত করেছেন। ছবিগুলো দেখুন--
একই প্রক্রিয়ায় রূপান্তর করা প্রখ্যাত শিল্পী অ্যালেক্সিস আর্নল্ড-এর (Alexis Arnold) আরও কিছু ভাস্কর্যের ছবি দেখুন এখানে।
অর্থাৎ রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় স্ফটিক (Crystallized) করা একটি জার্মান-ইংলিশ অভিধান বইকে সমুদ্রের তলদেশ থেকে অক্ষত অবস্থায় তোলা কুরআন শরীফ বলে দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।