ছবিটি বাবরি মসজিদের নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের পানিপথের কাবুলি বাগ মসজিদের ছবিকে বাবরি মসজিদের ছবি বলে প্রচার করা হচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন পেজ এবং আইডিতে একটি মসজিদের ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি ভারতের অযোধ্যার বাবরি মসজিদের। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
২৩ জানুয়ারি 'S M Sharif' নামের ফেসবুক আইডি থেকে একটি মসজিদের ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে বলা হয়, "পৃথিবী মানুষের হোক। বাবরি মসজিদ থেকে আবারো আজানের ধ্বনি আসুক। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা অপশক্তি নির্মুল হোক।" ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য ছবিটি বাবরি মসজিদের নয় বরং ভারতের হারিয়ানা রাজ্যের পানিপথ জেলার কাবুলি বাগ মসজিদের।
ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে সামাজিক মাধ্যম পিন্টারেস্ট (Pinterest) এ একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পোস্টের বিবরণীতে বলা হয়, এটি কাবুলি বাগ মসজিদ, যা ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের পানিপথ জেলার একটি প্রাচীন মসজিদ। স্ক্রিনশট দেখুন--
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে 'panipatonline' নামের একটি ওয়েবসাইটে 'Kabuli Bagh Mosque in Panipat' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, পানিপথ যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত ঐতিহাসিক স্থানগুলির অন্যতম। পানিপথ সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য যুদ্ধের কালানুক্রমের সাক্ষী, এসব যুদ্ধের স্মৃতি হিসেবে কিছু চিত্তাকর্ষক স্থাপনা তৈরি হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বিজয়ী ব্যক্তি ইতিহাস রচনা করেন। তাই বাবর এবং ইব্রাহিম লোধির মধ্যে পানিপথের প্রথম যুদ্ধের পর, বাবর যুদ্ধে জয়লাভ করে এবং ইব্রাহিম লোধির বিরুদ্ধে তার বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে, অসাধারণ সুন্দর কাবুলি বাগ মসজিদ নির্মাণ করেন। কাবুলি বাগ মসজিদ ইব্রাহিম লোধির উপর বাবরের বিজয়ের প্রতীক। স্ক্রিনশট দেখুন--
আলোচ্য পোস্টের ছবিটি (বামে) এবং কাবলি বাগ মসজিদের ছবি (ডানে) দেখুন পাশাপাশি--
অর্থাৎ, আলোচ্য ছবিটি ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের পানিপথ জেলায় অবস্থিত কাবুলি বাগ মসজিদের।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ভারতের অযোধ্যায় অবস্থিত বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে তার স্থালে রাম মন্দির নির্মান করে তা উদ্বোধন করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে অনেকেই ফেসবুকে নিজেদের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করছে।
সুতরাং ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ঐতিহাসিক কাবুলি বাগ মসজিদের ছবিকে, ভারতে ভেঙ্গে ফেলা বাবরি মসজিদের ছবি বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।