বাচ্চাদের খেলনাকে মুরগির নকল ডিম তৈরির ভিডিও বলে দাবি
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ভিডিওটি মুরগির নকল ডিম বানানোর নয় বরং এটি শিশুদের খেলনা বানানোর।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একটি ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, মুরগির নকল ডিম তৈরি করা হচ্ছে। এমন কিছু পোস্টের লিংক দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৪ আগস্ট 'মাওলানা কে.এম রবিউল আলম' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি শেয়ার করে লেখা হয়, "দেখুন মুরগী কি সুন্দর ভাবে ডিম দিতেছে"। পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
ভিডিওটি গত কয়েক বছরে একাধিক সময়ে একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত হলে অনেক ব্যবহারকারীকে ভিডিওতে দৃশ্যমান বস্তুগুলোকে প্রকৃতভাবেই নকল ডিম তৈরির ঘটনার বলে মনে করে মন্তব্য করতে দেখা গেছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, শিরোনামে করা দাবিটি সঠিক নয়। এটি মুরগির নকল ডিম বানানোর নয় বরং এটি শিশুদের খেলনা বানানোর একটি কারখানার ভিডিও।
ভিডিওটি থেকে কী ফ্রেম কেটে রিভার্স সার্চ করলে, ফরাসি সংবাদমাধ্যম France24 এ "No, the Chinese aren't trying to poison us with plastic eggs" শিরোনামে ভিডিওটি সম্পর্কিত একটি ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০১৮ সালের ৪ মে প্রকাশ করা হয়েছে। সে সময় ভিডিওটি চীনে নকল ডিম তৈরির কারখানার বলে সামাজিক মাধ্যমে দাবি করা হয়েছিল। স্ক্রিনশট দেখুন--
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভিডিওটি ২০১৭ সালের চীনের জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম WeChat-এ ভিডিওটি প্লাস্টিকের ডিম বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে দাবিতে ছড়িয়ে পড়লে দেশটির সাংহাই-ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা Jiefang Daily-এর ফ্যাক্ট চেক টিম ভিডিওটি যাচাই করে বিভ্রান্তিকর বলে চিহ্নিত করে। প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, এগুলো মূলত স্লাইম নামের চটচটে এক ধরণের পদার্থ দিয়ে বানানো ডিম আকৃতির শিশুদের খেলনা। যা বিষাক্ত না হলেও খাদ্যদ্রব্যও নয়।
সার্চ করার পর জানা যায়, ডিমের আকৃতির মজার খেলনাটি মূলত একটি কোরিয়ান খেলনা প্রস্তুতকারকের তৈরি, যা চীনের জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থাওবাও-এর বিক্রি করা হচ্ছে। পণ্যটি আলিএক্সপ্রেসের ওয়েবসাইটেও খুঁজে পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া প্রায় হুবহু আকৃতির ডিমের খেলনা ভিডিও ইউটিবেও খুঁজে পাওয়া গেছে।
অর্থাৎ এটি খাওয়ার উদ্দেশ্য তৈরি কোনো নকল ডিমের ভিডিও নয় বরং ডিম আকৃতির খেলনার।
ভিডিওটি ফ্রান্স২৪ ছাড়াও ভারতভিত্তিক ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা বুম লাইভও যাচাই করেছে।
সুতরাং স্লাইম দিয়ে বানানো খেলনাকে খাওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি নকল ডিম দামি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।