ছবিটি ভারতীয় এক ব্যক্তির, সাহায্য আবেদনটি ভুয়া
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ভারতের রবিকুমার নামের এক ব্যক্তির ছবি দিয়ে বাংলাদেশের মনিরুল দাবি করে আর্থিক সাহায্য চাওয়া হচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে এক ব্যক্তির ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি মনিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির। বলা হচ্ছে, ব্যাটারির এসিডে দগ্ধ বাকপ্রতিবন্ধী দরিদ্র রিকশাচালক মনিরুলের চিকিৎসার জন্য ৫ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নে এবং বর্তমানে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসাধীন আছেন। পোস্টগুলোতে আর্থিক সাহায্য পাঠানোর জন্য মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও নগদ নম্বর ও রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির নাম জুড়ে দেয়া হয়েছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৩ জানুয়ারি 'Rakib Vai' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে করা এরকম একটি পোস্ট নিচের স্ক্রিনশটে দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টের বর্ণনায় করা তথ্য বিভ্রান্তিকর ও সাহায্যের আবেদন প্রতারণাপূর্ণ। ছবিগুলো বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তির নয় বরং রবিকুমার নামে এক ভারতীয় নাগরিকের। রবিকুমার ভারতের তামিলনাড়ুর রিচার্ডসন ডেন্টাল ও ক্রেনিওফেসিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং এখন তার জন্য এখন আর তহবিল সংগ্রহও করা হচ্ছেনা।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ভারতের তহবিল সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান কিটো-এর ( www.Ktto.org) ওয়েবসাইটে "Offer A Helping Hand To Support রাবি 'S Treatment' শিরোনামে একটি নিবন্ধে ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়। এতে বলা হয়, ছবির ব্যক্তি ত্বকের বৃদ্ধির বিরল রোগাক্রান্ত ছিলেন। পাশপাশি ফান্ডরাইজিং ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন থেকে জানা যায় আক্রান্ত ব্যক্তিটির চিকিৎসার জন্য তহবিল সংগ্রহও শেষ হয়েছে। অর্থাৎ এখন আর আর্থিক সাহায্য গ্রহণ করা হচ্ছেনা। স্ক্রিনশট দেখুন--
ক্রাউডফাইন্ডিং প্ল্যাটফর্মটিতে ওই ব্যক্তির জন্য অর্থ সহায়তা চেয়ে করা নিবন্ধে ভারতের তামিলনাড়ুর রাজ্যের রিচার্ডসন ডেন্টাল ও ক্রেনিওফেসিয়াল হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্রও যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। দেখুন--
এছাড়া, কিটো এর ফেসবুক একাউন্টেও ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ঐ ব্যক্তির জন্য অর্থ সহায়তা চেয়ে পোস্ট করতে দেখা গেছে।
অর্থাৎ নিশ্চিতভাবেই ছবিটি বাংলাদেশি কোন ব্যক্তির নয়। একইসাথে পোস্টগুলোতে সহযোগিতা পাঠানোর জন্য দেয়া নম্বরগুলোতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
সুতরাং ভারতীয় নাগরিকের ছবি জুড়ে দিয়ে তাকে বাংলাদেশি দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া তথ্যসহ আর্থিক সহায়তার আবেদন জানানো হচ্ছে, যা প্রতারণাপূর্ণ।