ফ্রান্স বিরোধী বিক্ষোভের পুরোনো ভিডিওকে ভারত বিরোধী বিক্ষোভ বলে দাবি
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ২০২০ সালে মহানবীকে বিদ্রুপ করে কার্টুন প্রকাশের ঘটনায় ফ্রান্স বিরোধী বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও এটি।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ থেকে একটি মিছিলের ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, সম্প্রতি ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপি'র রাজনীতিবিদ ও দলটির মুখপাত্রের বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের ফুটেজ এটি। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৭ জুন 'Mahedi Hasan Sagor' নামের ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "আজ বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ( সাঃ) এর প্রেমে ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ এ মাঠে নেমেছে বাংলাদেশের জনতা.....................।" পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয় বরং ২০২০ সালে মহানবী (সা.) কে বিদ্রুপ করে কার্টুন প্রকাশের ঘটনায় ফ্রান্স বিরোধী বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও এটি।
ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স সার্চ করার পর, 'Zilan Hasnat Kiash' নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ২ নভেম্বর "নাটোরে মহানবী (সা.) কে ব্যাঙ্গ করার প্রতিবাদে ফ্রান্স বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল" শিরোনামে আলোচ্য ভিডিওটির অনুরূপ একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটি দেখুন--
বিভ্রান্তিকর দাবিতে সম্প্রতি ভাইরাল ভিডিও এবং ইউটিউবের ভিডিওটি যে একই ঘটনার তার প্রমাণ হলো- দুটি ভিডিওতেই বহুজাতিক জুতা ও বস্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এপেক্স-এর আউটলেটের সাইনবোর্ড দেখা যায়।
আবার, ভিডিওটি যে সাম্প্রতিক নয় তার আরেকটি প্রমাণ হলো- বিভ্রান্তিকর দাবিতে পোস্ট করা ফেসবুক ভিডিওর শুরুতে মিছিলে, 'ফ্রান্সের পন্য, বয়কট করো, করতে হবে' মর্মে স্লোগান দিতে শোনা যায়। অর্থাৎ, ভিডিওটি ফ্রান্সে মহানবী (সা.) এর ব্যঙ্গচিত্র বা কার্টুন প্রকাশের প্রতিবাদে মিছিলের সময় ধারণ করা। ইউটিউব ভিডিওর স্ক্রিনশট এবং বিভ্রান্তিকর দাবির ফেসবুক ভিডিওর স্ক্রিনশটের পাশাপাশি তুলনা দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওটি সাম্প্রতিক কোনো বিক্ষোভের নয় বরং এটি দেড় বছর আগে মহানবী (সা.) কে বিদ্রুপ করে কার্টুন প্রকাশের ঘটনায় ফ্রান্স বিরোধী বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও।
প্রসঙ্গত সম্প্রতি ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দু'জন নেতা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করার পর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো সহ বহু দেশ এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে সংবাদমাধ্যমে।
সুতরাং দেড় বছর আগের একটি বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।