ছবিগুলো ২০১৭ সালে রংপুরের সহিংসতার, বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জের নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ছবিগুলো ২০১৭ সালে রংপুরে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনার, বাগেরহাটের নয়।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে চারটি ছবির একটি কোলাজ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলার আমড়বুনিয়া গ্রামে হিন্দু বাড়িতে দুর্বৃত্তদের আগুন দেয়ার ছবি এগুলো। একটি ছবিতে পুড়ে যাওয়া বাড়ির সামনে এক মহিলার কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায়। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১২ এপ্রিল 'Amit Dey' নামের ফেসবুক আইডি থেকে কোলাজটি পোস্ট করে লেখা হয়, "#মন্দিরে_হামলা, হিন্দু বাড়িতে অগ্নি সংযোগঃ বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলার আমড়বুনিয়া গ্রামে বহু হিন্দু বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। .......।" স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ক্যাপশনে করা দাবিটি সঠিক নয়। মূলত ২০১৭ সালে রংপুরে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনার ছবি এগুলো।
ছবিগুলো পৃথকভাবে রিভার্স সার্চ করার পর, ১০ নভেম্বর ২০১৭ সালে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ২৪-এ প্রকাশিত একটি খবর তিনটি ছবি খুঁজে যায়, যা ভাইরাল ফেসবুক পোস্টের দৃশ্যমান। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তৎকালে রংপুরের ঠাকুরপাড়ার এক যুবক গত তার ফেইসবুক পেইজ ধর্ম অবমাননামূলক ছবি পোস্ট করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ঘর-বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ঘটে। ছবিগুলো সেই ঘটনার।
ছবিগুলো পৃথক স্ক্রিনশটে দেখুন--
উপরের দ্বিতীয় ছবি--
নিচের প্রথম ছবি--
নিচের দ্বিতীয় ছবি--
পুনরায় সার্চ করার পর, মূল ধারার গণমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টারে ২০১৭ সালে ১১ নভেম্বর " Mayhem over Facebook post" নামের একটি প্রতিবেদনে ভাইরাল ফেসবুক পোস্টে দৃশ্যমান উপরের প্রথম ছবিটিও খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটিও রংপুরের ঠাকুরপাড়ার ঐ সহিংসতার ঘটনার ছবি। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ সবগুলো ছবিই ২০১৭ সালের রংপুরের সহিংসতার ঘটনার, সাম্প্রতিক নয়।
প্রসঙ্গত বাগেরহাটের মোরলগঞ্জে ফেসবুকে ইসলাম ও মহানবী (সা.) কে অবমাননা করে স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগে গত সোমবার রাতে জনৈক কৌশিক বিশ্বাসের বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনার খবর প্রকাশিত হয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যমে।
সুতরাং ২০১৭ সালে রংপুরে ঠাকুরপাড়া গ্রামের ধর্মীয় সহিংসতার পুরোনো ছবি বাগেরহাটের সাম্প্রতিক ঘটনার দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।