ছবিটি ২০১২ সালের অগ্নিকাণ্ডের, কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতার নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ২০১২ সালে রাজধানীর পুরান ঢাকার কায়েতটুলী এলাকার একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ছবি এটি।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একটি অগ্নিকাণ্ডের ছবির শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলার আমড়বুনিয়া গ্রামে হিন্দু বাড়িতে দুর্বৃত্তদের আগুন দেয়ার দৃশ্য এটি। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১২ এপ্রিল 'Amit Roy' নামের ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে লেখা হয়, "#মন্দিরে_হামলা, হিন্দু বাড়িতে অগ্নি সংযোগঃ বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলার আমড়বুনিয়া গ্রামে বহু হিন্দু বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ........।" স্ক্রিনশট দেখুন বিস্তারিত--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টের বর্ণনায় করা দাবিটি সঠিক নয়। মূলত ২০১২ সালে রাজধানীর পুরান ঢাকার কায়েতটুলী এলাকার একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ছবি বিভ্রান্তিকর দাবিতে শেয়ার করা হচ্ছে।
ছবিটি আলাদা করে রিভার্স সার্চ করার পর, 'Bangladesh In My Eyes' নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওর থাম্বনিলে ভাইরাল ফেসবুক পোস্টের হুবহু ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। "Fire in Old Dhaka (Video 02)" শিরোনামে ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর আপলোড প্রকাশিত ভিডিওটির বিবরণে লেখা হয়েছে, ২০১২ সালের ২৪ আগস্ট রাজধানীর পুরান ঢাকার কায়েতটুলী এলাকায় ঘটা অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও এটি। ইউটিউব ভিডিওর ১৩ সেকেন্ডে দেখতে পাওয়া একটি ফ্রেম থেকেই মূলত ভাইরাল ছবিটি নেয়া হয় এবং ফেসবুকে বিভ্রান্তিকর দাবিতে শেয়ার করা হচ্ছে। ভিডিওটি দেখুন--
ইউটিউব ভিডিও থেকে নেয়া স্ক্রিনশট এবং আলোচ্য ফেসবুক ছবিটির পাশাপাশি তুলনা দেখুন--
কি-ওয়ার্ড ধরে সার্চ করার পর, দৈনিক কালের কণ্ঠ এর অনলাইন সংস্করণে "পুরান ঢাকায় অগ্নিকাণ্ড" শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০১২ সালের ২৫ আগস্ট শনিবার প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, "রাজধানীর পুরান ঢাকার কায়েতটুলী এলাকার একটি ভবনে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় অগ্নিকাণ্ডে একটি জুতা ও একটি লুডুর কারখানা পুড়ে গেছে।" আগুন লাগার ঘটনাটি ২০১২ সালের ২৪ আগস্ট শুক্রবারের। যা ইউটিউব ভিডিওর বিবরণের সাথে হুবহু মিলে যায়। অর্থাৎ ভিডিওটি এবং প্রতিবেদন একই ঘটনার। প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখুন--
সুতরাং ২০১২ সালের পুরান ঢাকার একটি অগ্নি দুর্ঘটনার ছবি বাগেরহাটের সাম্প্রতিক ঘটনার দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।