মুনিয়াকে নিয়ে নেতিবাচক প্রচার: কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে সিন্ডিকেট রিপোর্টিং
একই প্রতিবেদন হুবহু প্রকাশিত হয়েছে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে; যেখানে মুনিয়াকে 'খারাপ মেয়ে' হিসেবে তুলে ধরার প্রয়াস চালানো হয়েছে
গুলশানের একটি বাসা থেকে সম্প্রতি মোসাররাত জাহান মুনিয়া নামে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর ঘটনাটিকে 'আত্মহত্যা' বলে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। নিহতের বোন নুসরাত জাহান 'আত্মহত্যায় প্ররোচনা'র অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
এই ঘটনায় সার্বিকভাবে বাংলাদেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যমের কভারেজ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ নিয়ে বুম বাংলাদেশ-এর আগের একটি প্রতিবেদন পড়ুন: "গুলশানে তরুণীর 'আত্মহত্যা'র ঘটনা মিডিয়া যেভাবে দেখাচ্ছে"।
এছাড়া বিবিসি বাংলা মিডিয়া কভারেজ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে, "বসুন্ধরার এমডি: কথিত একটি 'আত্মহত্যার' মিডিয়া কভারেজ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড়"।
ঘটনার পরপর প্রথম দিকে ডেইলি স্টার পত্রিকায় প্রশ্নবিদ্ধ কভারেজ লক্ষ্য করা গেলেও পরে পত্রিকাটি তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে এবং তাদের ইউটিউব চ্যানেলে সার্বিক মিডিয়া কভারেজ নিয়ে একটি পর্যালোচনা প্রচার করে, "গুলশানে তরুণীর মরদেহ উদ্ধার, মিডিয়ার নীতি নিয়ে প্রশ্ন"।
মুনিয়ার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গত ২৯, ৩০ এবং আজ ১ মে এই তিন দিন ধরে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে মুনিয়াকে নিয়ে নেতিবাচক কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, মূলত একটি প্রতিবেদন শিরোনাম পরিবর্তন এবং কিছু সম্পাদনা করে একাধিক সংবাদমাধ্যমে একযোগে প্রকাশিত হয়েছে; যেটাকে 'সিন্ডিকেটেড রিপোর্টিং' হিসেবে অভিহিত করা যায়।
এখানে মোটামুটি পরিচিত কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলো তুলে ধরা হচ্ছে-
রুপায়ন গ্রুপের মালিকানাধীন দৈনিক দেশ রূপান্তর: বোনের লোভে লোভী মুনিয়া
আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের মালিকানাধীন দৈনিক সময়ের আলো: পোশাকের মতো প্রেমিক বদলাতেন মুনিয়া
আহছানিয়া মিশনের মালিকানাধীন দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ: মুনিয়া সম্পর্কে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য
নাসিমা খান মন্টি সম্পাদিত আমাদের সময় ডটকম: পোষাকের মত প্রেমিক বদলাতেন মোসারাত জাহান মুনিয়া
পূর্বপশ্চিম বিডি: মুনিয়ার একের পর এক পুরুষ শিকার ছিলো নেশা ও পেশা
দেশবন্ধু গ্রুপের মালিকানাধীন: দৈনিক আজকালের খবর: পোশাকের মতোই প্রেমিক বদলাতেন মুনিয়া
ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম: অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে করেছিলেন মুনিয়া? এসব নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা করেছিলেন তার বড় বোন?
কাজী এরতেজা সম্পাদিত দৈনিক ভোরের পাতা: ক্লাস নাইনেই দুই বাচ্চার বাবাকে গোপনে বিয়ে করেছিল মুনিয়া!
বাংলা প্রতিদিন নামে একটি অনলাইন পোর্টাল: একের পর এক প্রেমিক বদলে অভিজাত বনেছে মুনিয়া, বোন-ভগ্নিপতিকে বানিয়েছে ধনাঢ্য
শিরোনামগুলো থেকেই স্পষ্ট যে, এসব প্রতিবেদনে মুনিয়াকে 'বাজে মেয়ে' হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। আরও অনলাইন বহু পোর্টালে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। আমরা এখানে সংবাদমাধ্যম হিসেবে অপেক্ষাকৃত পরিচিত কয়েকটির প্রতিবেদন উল্লেখ করেছি।
উপরিউক্ত প্রতিবেদনগুলো মূলত একটি প্রতিবেদন থেকে উৎসারিত। একেক সংবাদমাধ্যম একেক শিরোনামে প্রকাশ করলেও ভেতরে সবগুলো প্রতিবেদন পরস্পরের সাথে মিলে যায়। কোনো ক্ষেত্রে হুবহু মিলে, আবার কোনো ক্ষেত্রে কিছুটা সম্পাদনার ফলে আংশিকভাবে মিলে।
এগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম গত ২৯ এপ্রিল বাংলা প্রতিদিন পোর্টালটিতে "একের পর এক প্রেমিক বদলে অভিজাত বনেছে মুনিয়া, বোন-ভগ্নিপতিকে বানিয়েছে ধনাঢ্য" শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
এর পরদিন দেশ রূপান্তর-এর প্রিন্ট ভার্সনে প্রকাশিত হয় "বোনের লোভে লোভী মুনিয়া" শিরোনামের প্রতিবেদন।
লক্ষ্যণীয় হলো, বাংলা প্রতিদিনের প্রতিবেদনটি 'গল্প' আকারে বর্ণিত হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে 'তথ্য' হিসেবে দাবি করা বিষয়গুলো কোনো সূত্র উল্লেখ ছাড়াই তুলে ধরা হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও কিছু তথ্যের সূত্র হিসেবে 'জানা যায়' 'অনেকেই মনে করেন' এসব অস্পষ্ট বরাত দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে দেশ রূপান্তর-এর প্রতিবেদনটি 'অনুসন্ধানী প্রতিবেদন" আকারে উপস্থাপিত হয়েছে। যেমন, "বাড়িতে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে", "এই প্রতিবেদককে বলেন", "মুনিয়ার একাধিক আত্মীয় বলেন", "মুনিয়ার সাবেক প্রেমিক দাবি করে দেশ রূপান্তরকে বলেন" ইত্যাদি শব্দগুচ্ছ থেকে বুঝা যায় যে, দেশ রূপান্তর সরেজমিনে অনুসন্ধান করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, বাংলা প্রতিদিন-এর "গল্প" এবং দেশ রূপান্তর-এর "অনুসন্ধানী প্রতিবেদন" এর কিছু কিছু প্যারা অস্বাভাবিকভাবে হুবহু মিলে যায়!
যেমন প্রথমে বাংলা প্রতিদিন-এর নিচের প্যারাটি পড়ুন-
"বাবা মা মৃত্যুর পর এই বোন ভগ্নিপতিই ছিল তার একমাত্র অভিভাবক। কিন্তু দুহাতে অঢেল টাকা কামানোর ধান্ধায়, অর্থ বিত্তের লোভে মুনিয়ার জীবন কোথায় পৌঁছে যাচ্ছে সে খবর নেয়ার কোনো দরকারই তারা মনে করেননি। বরং ছোট বোনকে যথেচ্ছা চলাচল, যার সঙ্গে খুশি দিন রাত যাপনের অবাধ স্বাধীনতা দিয়ে বোন ভগ্নিপতি হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। মুনিয়ার ফ্ল্যাট থেকে ৫০ লাখ টাকা খোয়া যাওয়ার যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে কথিত অডিও রেকর্ডে, এ টাকাও মুনিয়ার হাত ঘুরে তার বোন ভগ্নিপতির ঘরে পৌঁছেছে বলেই মনে করছেন অনেকে।"
এবার পড়ুন দেশ রূপান্তর-এর প্রতিবেদনের নিচের দুটি প্যারা-
"মুনিয়ার আত্মীয়রা বলছেন, বাবা-মার মৃত্যুর পর এই বোন-ভগ্নিপতিই ছিলেন মুনিয়ার একমাত্র অভিভাবক। টাকার লোভে তারা মুনিয়ার জীবন কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন সেটা একবার জানারও চেষ্টা করেননি। বরং ছোট বোনকে যথেচ্ছাচার করার, যেখানে-সেখানে থাকার স্বাধীনতা দিয়ে বোন-ভগ্নিপতি হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অঙ্কের অর্থ।
পুলিশ সূত্রের ধারণা, মুনিয়ার ফ্ল্যাট থেকে ৫০ লাখ টাকা খোয়া যাওয়ার যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অডিও রেকর্ডে, এ টাকাও মুনিয়ার হাত ঘুরে তার বোন-ভগ্নিপতির ঘরে পৌঁছে থাকতে পারে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে বলেও ওই সূত্র জানিয়েছে।"
বাংলা প্রতিদিন-এর প্যারার প্রথমাংশকে "মুনিয়ার আত্মীয়রা বলছেন" হিসেবে প্যারাফ্রেইজিংয়ের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে দেশ রূপান্তর-এর প্রতিবেদনে। কিন্তু প্যারাফ্রেইজিংয়ের পরও উভয় সংবাদমাধ্যমের লেখার মিলটুকু রয়েই গেছে।
বাংলা প্রতিদিন-এর প্যারার শেষাংশকে হুবহু কপিপেস্ট করা হয়েছে দেশ রূপান্তর-এর প্রতিবেদনে। শুধু বাংলা প্রতিদিন যেই বক্তব্যকে "বলেই মনে করছেন অনেকে" এর মতো অস্পষ্ট সূত্রের বরাতে উল্লেখ করেছে, সেখানে দেশ রূপান্তর বক্তব্যের বিশ্বস্ততা বৃদ্ধিতে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করেছে "পুলিশ সূত্রের ধারণা"। অর্থাৎ, এক্ষেত্রেও সূত্র স্পষ্ট না হলেও সেটিকে আরও বিশেষায়িত করা হলো। "মনে করছেন অনেকে" এর চেয়ে "পুলিশ সূত্রের ধারণা" বেশি আস্থা জন্মাতে পারে পাঠকের মনে।
দেশ রূপান্তর- এর প্রতিবেদনে তাদের নিজেদের প্রতিবেদক "এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে" জেনেছেন বলে নিচের প্যারাটি লেখা হয়েছে--
"নিহত মুনিয়ার স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার মনোহরপুর এলাকার উজির দীঘির দক্ষিণপাড়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার ওই বাড়িতে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মুনিয়া নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় কুমিল্লা শহরের ৬নং ওয়ার্ডের শুভপুর এলাকার নিলয় নামে এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে যায়। নিলয় বিবাহিত, দুই সন্তানের জনক। কিন্তু মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় নিলয়কে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। ঘটনাটি ২০১৪ সালের। ওই সময় মুনিয়ার মা-বাবা জীবিত ছিলেন। ওই মামলায় বলা হয়, 'আমার অপ্রাপ্ত বয়স্ক বোনকে ফুসলিয়ে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে তার সম্ভ্রম লুটসহ জানমালের ভয়াবহ ক্ষতির শঙ্কা করছি। অবিলম্বে নিলয়কে গ্রেপ্তারপূর্বক মুনিয়াকে উদ্ধারকল্পে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানাচ্ছি। ওই মামলার সাড়ে তিন মাস পরে কুমিল্লার কোতোয়াাল থানা পুলিশ ফেনীতে নিলয়ের এক আত্মীয় বাড়িতে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করে আনে মুনিয়াকে। পরে স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় গ্রাম্য বৈঠকে মোটা অঙ্কের জরিমানা আদায়ের মাধ্যমে নিলয়-মুনিয়ার বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটানো হয় এবং যে যার পরিবারে ফিরে যায়। এরপর নুসরাত ঢাকায় পাঠিয়ে দেন মুনিয়াকে।"
এবার পড়ুন একদিন আগে বাংলা প্রতিদিন-এর প্রকাশিত প্রতিবেদনে কী লেখা হয়েছিলো--
"কুমিল্লায় নবম শ্রেণীতে পাঠরত অবস্থাতেই মোসারাত জাহান মুনিয়া পাশের গ্রামের নীলয় নামের এক যুবকের গলায় ঝুলে পড়েছিলেন। বিবাহিত, দুই সন্তানের জনক নিলয়ের হাত ধরে বাড়ি ছেড়ে অজানা উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন, শুরু করেছিলেন দাম্পত্য জীবন। কিন্তু মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালী থানায় নিলয়কে আসামি করে নারী নির্যাতন সংক্রান্ত মামলা রুজু করেন। মামলায় বলা হয়, আমার অপ্রাপ্ত বয়স্ক বোনকে ফুসলিয়ে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে তার সম্ভ্রম লুটসহ জানমালের ভয়াবহ ক্ষতির শঙ্কা করছি।
অবিলম্বে নিলয়কে গ্রেফতারপূর্বক মুনিয়াকে উদ্ধার কল্পে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণর জোর আবেদন জানান তিনি। দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস পরে কুমিল্লার পুলিশ ফেনীতে নিলয়ের এক আত্মীয় বাড়িতে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করে আনে মুনিয়াকে। কিন্তু ততদিনে মুনিয়া নিলয় রীতিমত বিয়ে শাদী করে ঘর সংসার শুরু করে দিয়েছিল। পরে স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় গ্রাম্য বৈঠকে মোটা অঙ্কের জরিমানা আদায়ের মাধ্যমে নিলয় মুনিয়ার বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটানো হয় এবং যে যার পরিবারে ফিরে যায়।"
উভয় প্যারায় বোল্ড করা লাইনগুলো খেয়াল করুন। একটি পত্রিকার প্রতিবেদক নিজে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে 'নিজের ভাষায়' যে প্রতিবেদন লিখেছেন তার লেখার সাথে অন্য সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের বর্ণনার ধারাবাহিকতা এবং শব্দগুচ্ছ ও বাক্য যেভাবে মিলে যাচ্ছে তা বিষ্ময়কর!
এভাবে দেশ রূপান্তর এবং বাংলা প্রতিদিন এর প্রতিবেদন দুটির মধ্যে আরও বেশ কিছু মিল রয়েছে।
অন্যদিকে, আমাদের সময় ডটকম, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ, দৈনিক সময়ের আলো, দৈনিক আজকালের খবর, দৈনিক ভোরের পাতা ইত্যাদি সংবাদমাধ্যমে বাংলা প্রতিদিনে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তা হুবহু প্রকাশ করা হয়েছে; এমনকি সাবহেডিংগুলোও একই রাখা হয়েছে কপিপেস্ট করার সময়।
সিন্ডিকেট রিপোর্টে ভুল তথ্য:
একসাথে যে রিপোর্টটি বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে সেখানকার সব তথ্য বা বক্তব্য বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেনি। ফলে সেগুলোর সত্যমিথ্যার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত আমরা দিচ্ছি না।
তবে ওই প্রতিবেদনে অন্তত একটি ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রতিবেদনটির এক জায়গায় লেখা হয়েছে, "নিলয়ের সঙ্গে প্রেম বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর ২ বছর বড় বোনের কাছে থেকে পড়াশোনা চালালেও এসএসসি পরীক্ষা দিয়েই মুনিয়া পাড়ি জমিয়েছিলেন ঢাকার উদ্দেশে।"
অর্থাৎ, এখানে দাবি করা হয়েছে মুনিয়া এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকায় আসেন। কিন্তু ইতোমধ্যে মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোতে মুনিয়ার পড়াশোনা সংক্রান্ত যেসব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, মুনিয়া এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন ঢাকার একটি স্কুল থেকে।
২৭ এপ্রিল বাংলা ট্রিবিউনের এক রিপোর্টে লেখা হয়েছে, "জানা যায়, নগরীর মনোহরপুরের উজির দীঘির দক্ষিণপাড় এলাকার বাসিন্দা মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি সফিকুর রহমানের মেয়ে মোসারাত জাহান মুনিয়া রাজধানীর মিরপুর ক্যান্ট. পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। এবার এ প্রতিষ্ঠান থেকে তার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। এর আগে সে কুমিল্লা নগরীর বাদুরতলা এলাকার ওয়াইডব্লিউসিএ নামক একটি স্কুল থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে। পরে সে নগরীর নজরুল এভিনিউ এলাকার মডার্ন হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে এবং সর্বশেষ রাজধানীর মিরপুর মনিপুরী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করে। পরিবারে এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সে সবার কনিষ্ঠ।"
একই রকম তথ্য দেয়া হয়েছে বাংলা ট্রিবিউনের আরও রিপোর্টে, ঢাকা ট্রিবিউনে, ইত্তেফাকে।