সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থ্রেডস’এ একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে চলমান বন্যার পানিতে অনেক গবাদি পশু ভেসে যাচ্ছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২২ আগস্ট 'Tfzashikrahman' নামে একটি থ্রেডস একাউন্ট থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলা হয়, "আহ! মানুষের কি চিৎকার। এই অবুজ প্রানিদের জন্য। তারা তো কোন কিছুই করে নাই। কিছু বুঝে ও না।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। গবাদি পশু ভেসে যাওয়ার আলোচ্য ভিডিওটি সম্প্রতি বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে সৃষ্ট সাম্প্রতিক বন্যার নয় বরং এটি ২০২০ সালে মেক্সিকোতে হারিকেন হান্নার প্রভাবে সৃষ্ট বন্যায় গবাদি পশুকে ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার।
ভাইরাল ভিডিওটির কি ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে 'Karoll Pineda Marrugo' নামের একটি এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্টে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যার সাথে থ্রেডস এ প্রচারিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর পোস্ট করা হয়। ভিডিওটির লেখা অনুবাদ করে বলা হয়, ভিডিওটি ক্যানেল ডেল ডিকে ডি কার্টেজেনা (কেউ কেউ টারবাকো বলে থাকে) জলের স্রোতে গরু ভেসে যাওয়ার নয়। এটি এই বছরের জুলাই মাসে মেক্সিকোর জাকুয়ালপান নদীর পানি উপচে পড়ার। ভিডিওটি দেখুন--
আলোচ্য ভিডিওটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে "Thousands affected by the passage of 'Hanna'; 5 dead" শিরোনামে 'LaJornada' নামের ম্যক্সিকোভিত্তিক স্পানিশ ভাষার একটি সংবাদপত্রে ২০২০ সালের ২৮ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেই প্রতিবেদনে প্রকাশিত ভিডিওর সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, ২০২০ সালের ২৭ জুলাই পশ্চিম মেক্সিকোর নয়ারিত রাজ্যে হারিকেনের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। ফলে সেখানে অবস্থিত জাকুয়ালপান নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। একারণে এর আশেপাশে গবাদি পশু বন্যার পানিতে ভেসে যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ পানিতে গবাদিপশু ভেসে যাওয়ার এই ভিডিওটি সম্প্রতি ভারত থেকে আকস্মিকভাবে আসা পানিতে সৃষ্ট বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে চলমান ভয়াবহ বন্যার নয়। বরং ভিডিওটি মেক্সিকোতে হওয়া ২০২০ সালের বন্যার সময়ে ধারণ করা।
সুতরাং মেক্সিকোতে ২০২০ সালে হারিকেনের প্রভাবে সৃষ্ট ভিন্ন এক বন্যায় গবাদি পশুর ভেসে যাওয়ার ভিডিও বাংলাদেশের চলমান বন্যার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে থ্রেডসে, যা বিভ্রান্তিকর।